পেরুর রাজনৈতিক সংকট সমাধানে নির্বাচন এগিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট দিনা বোলুয়ার্ত। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচন দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার এই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে দেশটির কংগ্রেস। খবর আল-জাজিরার।
পেরুতে বর্তমান প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে বিরোদ্ধে বিক্ষোভ করেছে জনগণ। বিক্ষোভ আন্দোলনে ইতোমধ্যে কয়েক ডজন নাগরিক প্রাণও হারিয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী ২০২৬ সালে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। আইনপ্রণেতারা গত মাসে এই নির্বাচনের তারিখ এগিয়ে ২০২৪ সালের এপ্রিলে নিয়ে আসতে সম্মত হয়েছিলেন। কিন্তু শনিবার ভোরবেলা অনুষ্ঠিত একটি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে পক্ষে ৪৫টি, বিপক্ষে ৬৫টি এবং দুটি অনুপস্থিতিতে প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করে কংগ্রেস।
বামপন্থী দলগুলি দাবি করেছিল যে নির্বাচনের অগ্রগতির সাথে একটি সাংবিধানিক সম্মেলন হবে। প্রতিবাদকারীরাও বারবার একই আহ্বান জানিয়েছে।
কংগ্রেস সভাপতি জোস উইলিয়ামস বলেছেন, ‘এই ভোটের মাধ্যমে সাত ঘণ্টার বেশি বিতর্কের পর নির্বাচনের অগ্রগতির জন্য সাংবিধানিক সংস্কার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়৷’
ভোটের পরে ‘পুনর্বিবেচনার’ জন্য একটি অনুরোধ পেয়েছিলেন উইলিয়ামস। এর কারণে সোমবার একটি নতুন অধিবেশন বসতে পারে। যদিও সিদ্ধান্তটি ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে ৭ ডিসেম্বর থেকে প্রায় প্রতিদিনেই বিক্ষোভ হচ্ছে। ফলে দেশটিতে ক্রমেই তীব্র হচ্ছে রাজনৈতিক সংকট। মূলত কংগ্রেস ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা এবং ডিক্রির মাধ্যমে শাসন করার পরে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি পেদ্রো কাস্টিলোকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
বিক্ষোভকারীরা বোলুয়ার্তের অপসারণের পাশাপাশি কংগ্রেস ভেঙে দেওয়ার পর অবিলম্বে নির্বাচন এবং একটি নতুন সংবিধান দাবি করেছে।
বলুয়ার্তে জোর দিয়ে বলেছিলেন, ‘প্রেসিডেন্সিতে থাকার কোনো আগ্রহ আমার নেই। আমি এখানে আছি শুধু আমার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের জন্য।’
ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কংগ্রেস দ্বারা কাস্তিলোর অভিশংসিত হওয়ার পরে এবং গ্রেপ্তার হওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী তার জায়গায় প্রতিস্থাপন করা হয় বলুয়ার্তেকে। এরপরই কাস্তিলোর দরিদ্র এবং গ্রামীণ এলাকার সমর্থকরা বলুয়ার্তের পদত্যাগ চেয়ে নির্বাচন করার দাবিতে বিক্ষোভ করছে। তারা মহাসড় অবরোধ করেছে যার ফলে খাদ্য, জ্বালানী এবং অন্যান্য মৌলিক সরবরাহের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
পেরুর ন্যায়পাল অফিসের মতে, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির গ্রেপ্তারের পর থেকে সাত সপ্তাহের বিক্ষোভে ৪৭ জন নিহত হয়েছে। স্বায়ত্তশাসিত মানবাধিকার কার্যালয় বলেছে, দুটি শিশুসহ আরও ১০ জন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু ঘটেছে। বিক্ষোভকারীদের রাস্তা অবরোধের কারণে তারা সঠিক চিকিত্সা বা পর্যাপ্ত ওষুধ না পেয়ে মারা গেছে।