রাশিয়া আগ বাড়িয়ে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার ওপর হামলা চালানো হলেই কেবল এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করে পাল্টা জবাব দেওয়া হবে।
গতকাল বুধবার রাশিয়ার মানবাধিকার কাউন্সিলের বার্ষিক বৈঠকে এসব কথা বলে পুতিন। এ সময় পারমাণবিক যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার হুমকি দিন দিন বাড়ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এই হুমকির বিষয়টি আড়াল করে রাখাটা ভুল হবে।’
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে পুতিন বলেন, ‘অন্য কোনো দেশে আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করা নেই। তবে তুরস্কসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে এ ধরনের অস্ত্র মোতায়েন করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।’
পুতিনের ভাষ্যমতে, ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। তবে এর মধ্যেই রাশিয়া যুদ্ধে উল্লেখযোগ্য ফলাফল পেয়েছে। ফলাফল বলতে তিনি বুঝিয়েছেন, ইউক্রেনের চার অঞ্চলকে রুশ ফেডারেশনের সঙ্গে অঙ্গীভূত করাকে। ওই চার অঞ্চল হলো, দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া।
অঞ্চলগুলো রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করায় আজভ সাগর রাশিয়ার ‘অভ্যন্তরীণ সাগরে’ পরিণত হয়েছে বলে উল্লেখ করে পুতিন। আজভ সাগরের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেন ও দক্ষিণ-পশ্চিম রাশিয়ার সীমান্ত রয়েছে। পুতিন বলেন, এটা রুশ শাসক পিটার দ্য গ্রেটেরও অভিলাষ ছিল।
এদিকে পুতিনের বক্তব্যের দ্রুতই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নিড প্রাইস সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা মনে করি পরমাণু অস্ত্র নিয়ে এই্ আলগা আলোচনা একেবারেই দায়িত্বজ্ঞানহীন।
তিনি আরো বলেন, এটি বিপজ্জনক। এই বক্তব্য সনায়ু যুদ্ধের পরবর্তী পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধের মূল চেতনার পরিপন্থী।
জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেছেন, মস্কোর ওপর আন্তর্জাতিক চাপের কারণে ইউক্রেন যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকি কমেছে বলে তিনি মনে করেন। জার্মানির একটি সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আপাতত একটা জিনিস বদলেছে। সেটি হলো রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি বন্ধ করেছে। এটা হয়েছে আন্তর্জাতিক চাপের কারণে।
এদিকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়া তার বোমা হামলা অব্যাহত রেখেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনস্কি বলেছেন, বুধবার দোনেৎস্ক অঞ্চলে রুশ বিমান হামলায় ১০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।