26.4 C
Sydney

রাজনীতিদেশে দুর্ভিক্ষ হবে না : প্রধানমন্ত্রী

দেশে দুর্ভিক্ষ হবে না : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের তারিখঃ

সারা বিশ্বে দুর্ভিক্ষ হলেও বাংলাদেশে হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, আরও এগিয়ে যাব, জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলব।

শুক্রবার বিকেলে যুবলীগের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত যুব মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেকে উন্নয়ন নাকি চোখেই দেখে না। এখন চোখ থাকতে যদি কেউ অন্ধ হয়, তাকে তো কিছু দেখানো যায় না। কিন্তু তারা তো ডিজিটাল বাংলাদেশ ব্যবহার করছে, মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। সবই তো আওয়ামী লীগের দেওয়া। আমরা উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছি, বাংলাদেশের মানুষ আজ নতুন করে বাঁচার আশা দেখছে।’

মহাসমাবেশের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বলেছিলেন বাংলাদেশকে কেউ দাবায়া রাখতে পারবে না। আমিও তা বিশ্বাস করি। ওরা যত কথাই বলুক বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, আমরা এগিয়ে যাব। বাংলাদেশকে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবো।’

বিএনপি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এইট পাশ আর মেট্রিক ফেল দিয়ে দেশ চললে সেই দেশের উন্নতি হয় না। দেশপ্রেম থাকলে দেশের মানুষের প্রতি কর্তব্যবোধ থাকলে এটা করা যায় আমরা তা করে দেখিয়ে দিয়েছি।’

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কার বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘২১ বছর পর আমরা যখন সরকারে আসি বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাই। মাঝখানে আট বছর বিএনপি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার, এরপর নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ সালে যখন সরকার গঠন করি, এই ১৪ বছরে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ, উন্নত বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশকে এখন আর কেউ আন্তর্জাতিকভাবেও অবহেলার চোখে দেখে না। প্রত্যেকেই বলে আজকে বাংলাদেশ এত ঘাত-প্রতিঘাতের পরও আজকে এগিয়ে যাচ্ছে।’

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমরা টাকা দেশের জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করছি। অর্থনীতিকে গতিশীল করাই আমাদের লক্ষ্য। তারা (বিএনপি) ক্ষমতায় ছিল- দুর্নীতি, লুটপাট করে হাজার হাজার টাকা কামাই করে বিদেশে গিয়ে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করতে। আমার কথা হলো- বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা সেটা কেউ রুখতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে, সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় এসেছিল। এসেই যুবলীগের নেতা মৌলভী সৈয়দ, আমাদের চট্টগ্রামের নেতা; বগুড়ার খসরু থেকে শুরু করে নারায়ণগগঞ্জের মুনির, ছাত্রলীগের মাহফুজ বাবুসহ নির্মমভাবে হত্যা করেছে, লাশও পায়নি। জিয়া যেমন শত শত সেনা অফিসার, বিমানবাহিনী অফিসার হত্যা করেছে তাদের পরিবার লাশ পায়নি। ঠিক এদেরও লাশ আত্মীয়-স্বজন পায়নি।’

বিএনপি নেতাদের মুখে আওয়ামী লীগের সমালোচনা শোভা পায় না বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘বিএনপির অনেক নেতা মানি লন্ডারিংয়ের কথা বলে, লুটপাটের কথা বলে, দুর্নীতির কথা বলে। আমি যুবলীগের নেতাকর্মীদের জানাতে চাই- তারেক জিয়ার শাস্তি হয়েছে মানি লন্ডারিংয়ের কেসে। তার বিরুদ্ধে আমেরিকা থেকে এফবিআইর লোক এসে সাক্ষী দিয়ে গেছে। মানি লন্ডারিং কেসে সাত বছর সাজা, ২০ কোটি টাকা জরিমানা; গ্রেনেড হামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত; দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারির জন্য সে সাজাপ্রাপ্ত। যাদের নেতাই হচ্ছে খুন-মানি লন্ডারিং-অবৈধ অস্ত্র চোরাকারবারি মামলার আসামি; তাদের মুখে আওয়ামী লীগের সমালোচনা শোভা পায় না।’

বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘যাদের নেতৃত্বে বিএনপি চলে তারা কে? খালেদা জিয়া… জিয়া ট্রাস্ট, সেই টাকা, একটি টাকাও এতিমদের হাতে যায়নি। সেই অরফানেজের টাকা, যেটা বিদেশ থেকে এসেছিল এদেশের এতিমদের জন্য। সে (খালেদা জিয়া) একটা চ্যারিটেবল ট্রাস্ট করেছিল এবং জিয়া অরফানেজ ফান্ড করেছিল, ট্রাস্ট করেছিল। এই দুইটার একটা পয়সাও না দিয়ে সমস্ত পয়সা তারা মেরে খায়। আর সেই কারণে খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত। তার ১০ বছর সাজা হয়েছে। সে হলো বিএনপির নেত্রী।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে। জিয়া ১৫ আগস্টের হত্যাকারীদের ইনডেমনিটি দিয়ে রক্ষা করেছিল। খালেদা অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে যাদের হত্যা করেছিল তাদের ইনডেমনিটি দিয়ে গেছেন। অর্থাৎ খুনিদের লালন-পালন করা তাদের চরিত্র।’

যুবলীগকে দেশ ও মানুষের সেবায় কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তরুণ সমাজেরই দায়িত্ব এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। যুবলীগের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলতে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। সংগঠনের সব নেতাকর্মীকে বলব, আদর্শ নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণের জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সেটাই হবে সকলের প্রতিজ্ঞা।’

মহাসমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, জাহাঙ্গীর কবির নানক। মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান খান নিখিল।

এর আগে দুপুর পৌনে ৩টার দিকে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সমাবেশের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুপুর আড়াইটায় জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যে দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে পেইন্টিং উপহার দেন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা। এরপর যুবলীগের উত্তরীয় পরিয়ে দেন যুবলীগের মহিলা নেত্রীরা। পরে সুবর্ণজয়ন্তী লোগো উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর যুবলীগের ওয়েবসাইট উদ্বোধন করা হয়।

সর্বশেষ

spot_img

জনপ্রিয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

ডেইলি মার্ক নিউজে জনপ্রিয়

ভারত-বাংলাদেশের যৌথ অংশগ্রহণে ব্রেমেনে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উদযাপন

মো. নাজিম উদ্দীন, ব্রেমেন প্রতিনিধি: বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিভা...

উজবেকিস্তানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনে গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারস্পরিক স্বার্থে উজবেকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ...

প্রধানমন্ত্রী আগামী সেপ্টেম্বরে ভারত সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে : মোমেন

পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী...

অস্ট্রেলিয়ায় ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির কোগরার ফ্রাই রিজার্ভ ও মিন্টুতে আজকের ঈদুল ফিতরের...

ডেইলি মার্ক নিউজে সর্বশেষ
Latest

ইসরাইলের হামলায় ১৩ শিশুসহ নিহত ৩০

গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা রোববার জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি ভূখ-ের উত্তরাঞ্চলে...

ট্রাম্পের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রস্তুত বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রস্তুত...

লেবাননের পূর্বাঞ্চলে ইসরাইলি হামলায় নিহত ৪০

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার প্রধান শহর বালবেকসহ দেশটির...

দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউস ট্রাম্পের

বিশ্বের কোটি কোটি মানুষকে তাক লাগিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে...