প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হওয়ার কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সর্বদা জনগণের ভোটেই ক্ষমতায় আসে। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনও কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেনি।’
জাতিসংঘের ৭৭তম অধিবেশনে যোগদান শেষে নিউ ইয়র্কস্থ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে স্থানীয় সময় শনিবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যারা নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চেয়েছিলেন তারা কারা? আওয়ামী লীগ সব সময় দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছে।
শেখ হাসিনা স্পষ্টভাবে নিশ্চিত করেছেন যে, জনগণ নির্বাচনে অবাধে তাদের ভোট দেবে এবং বিএনপিকে আশ্বস্ত করেছেন যে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।
‘আমি মনে করি, তারা (বিএনপি) সত্যিই চিন্তিত যে একটি স্বচ্ছ নির্বাচন হবে। কারণ, তারা ভোট কারচুপি এবং ভোটার তালিকায় ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার রাখার সুযোগ পাচ্ছে না। অন্যথায় উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই,’ উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে জনগণ নির্বিঘ্নে ভোট দেবে। ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন এমন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি, এটা তাদের দলের সিদ্ধান্ত।
তিনি আরও বলেন, ‘তারা জানে যে, সঠিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায় আসার কোনও সম্ভাবনা নেই। তারা হত্যা, অভ্যুত্থান ও ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আসতে অভ্যস্ত। এটাই বাস্তবতা।’
প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছে।
‘যদি কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা হারায় তাহলে কার কী করার আছে’ যোগ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকার দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সঠিক পথে এনেছে, যা সামরিক শাসন ও বিএনপি-জামায়াতের আমলে লাইনচ্যুত হয়েছিল বলে দাবি করেন শেখ হাসিনা।
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইভিএম একটি আধুনিক পদ্ধতি এবং বিশ্বের অনেক দেশেই এটি ব্যবহৃত হয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি যেখানে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে, সেখানে দ্রুত নির্বাচনের ফলাফল পাওয়া যায় এবং মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ভোট দিতে পারে।’
শেখ হাসিনা অবশ্য বলেছেন, এই ইভিএমের বিরুদ্ধে কিছু লোক আছে এটা ঠিক।
দেশে প্রবাসীদের বিনিয়োগ সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীরা যাতে দেশে বিনিয়োগ করতে পারেন, সেজন্য বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, সরকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের জন্য ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রবাসীদের মধ্যে যাদের এনআইডি নেই তারা পাসপোর্ট দিয়ে ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবেন। সেই ব্যবস্থা ইতোমধ্যে করা হয়েছে।
‘আপনি এই ইউএনজিএ থেকে কী নিয়ে দেশে ফিরছেন’-এমন এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বন্ধুত্ব, আমি বাংলাদেশের জন্য বন্ধুত্ব নিয়ে দেশে ফিরছি এবং বাংলাদেশ যে উন্নয়নের বিস্ময় সে কথাটাই সবাই বলার চেষ্টা করেছে।’
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো— আমরা শান্তি চাই, আমি যুদ্ধ চাই না, সংঘর্ষ চাই না। আমি মনে করি, সবচেয়ে বড় কথা আমি এই বার্তাটি সবার কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি এবং সবাই বাংলাদেশ এবং আমাদের ভূমিকার প্রশংসা করেছে।
সূত্র: বাসস