বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাক, সেটা বিএনপি-জামায়াত চায় না। তারা সব সময় ষড়যন্ত্র করে। তারা দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ জনগণের দল বলে কোন ষড়যন্ত্র করে তারা ঠিক থাকতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলেই দেশ উন্নয়ন হচ্ছে।উন্নয়নের যাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে সরকারের ধারাবাহিকতা থাকা প্রয়োজন।
নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে শনিবার নরসিংদী মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়াম মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতির কারণে বিএনপি, জন বিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হয়েছে। পক্ষান্তরে আওয়ামীলীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী একটি রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। বিএনপি তাদের বিগত দিনের কর্মকাণ্ড দ্বারা নির্বাচনের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত। আইন অনুযায়ী দুজনের একজনও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। ফলে জন বিচ্ছিন্ন বিএনপি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রতিপক্ষের সকল ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে প্রস্তুত।
এ সময় দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধতার প্রতীক। ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থেকে আগামী নির্বাচনের জন্য কাজ করে যেতে হবে। দল করলে দলের নিয়ম মেনে চলতে হবে, অনিয়ম করে দলের মনোনয়ন দেওয়ার দিন শেষ। আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা চিরদিনের জন্য কাউকে নেতৃত্ব ইজারা দেয়নি।
সেতুমন্ত্রী বলেছেন, ত্যাগী নেতারা আওয়ামী লীগের আস্থার ঠিকানা। দুঃসময়ের কর্মীরাই দলের আসল বন্ধু। ত্যাগী নেতাদের আর কোণঠাসা করে রাখা যাবে না। তাদেরকে ও দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান করে দিতে হবে।
এর আগে আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থেকে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিএম তালেব হোসেন’র সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থেকে দলকে সাংগঠনিক ভাবে মজবুত করতে দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্য রাখেন মির্জা আজম এমপি।
এছাড়াও সম্মেলন স্থলে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য অ্যাড. কামরুল ইসলাম এমপি, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য, সাবেক মন্ত্রী রাজি উদ্দিন আহম্মেদ রাজু এমপি, শিল্পমন্ত্রী অ্যাড. নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এমপি, আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. নজিবুল্লাহ হিরু, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মৃণাল কান্তি দাস এমপি।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাপা, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান, শ্রম জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান সিরাজ, কার্যনির্বাহী সম্পাদক ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাড. এবি এম রিয়াজুল কবীর কাউসার, অ্যাড. সানজিদা খানম, সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম, নরসিংদী জেলা আ’লীগের সাবেক সভাপতি, নরসিংদী-১ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য লে. কর্নেল (অব:) মো. নজরুল ইসলাম হিরু বীরপ্রতীক, নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনের সাংসদ জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন প্রমুখ।
সম্মেলনের উদ্বোধকের বক্তব্যকালে সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এমন একটি রাজনৈতিক দল। বাঙালীরা আজ যা কিছু পেয়েছেন। সব কিছু এই আওয়ামী লীগের হাত ধরেই এসেছে। দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জীবন দিয়েছেন।
নরসিংদীসহ সারাদেশে উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশে উন্নয়ন হচ্ছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বাসে বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে। এই ষড়যন্ত্রকারী কারা? যারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে হত্যার রাজনীতি জায়েজ করেছিল। এই ষড়যন্ত্রকারীরা দুর্নীতির মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়ন করেছিল। এরাই ষড়যন্ত্রকারী। এদের হাতে বাংলাদেশের সংবিধান ও গণতন্ত্র নিরাপদ নয়।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা এখন বিশ্ব নেতারাও করেন। তারা দেশে এসে সবাই শেখ হাসিনার প্রশংসা করে গিয়েছেন। কারণ তারা শেখ হাসিনার উন্নয়ন দেখেন কিন্তু বিএনপি তা দেখে না।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী ও চলার পথকে মসৃণ করাই আমাদের একমাত্র কাজ। এ জন্য আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।
প্রথম অধিবেশন শেষে সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে স্থানীয় কাউন্সিলর ও ডেলিগেটদের উপস্থিতিতে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। দ্বিতীয় অধিবেশন শেষে জিএম তালেব হোসেনকে সভাপতি ও পীরজাদা মোহাম্মদ আলীকে সাধারণ সম্পাদক করে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।