রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি এম আবদুল হামিদ।
তার উত্তরসূরি রাজা চার্লসের কাছে পাঠানো শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেছেন, “গভীরতম দু:খের সাথে এবং ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমি বিশ্বে দীর্ঘতম সময় সিংহাসনে থাকা মহামান্য রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।”
৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ তারিখের বার্তায়, তিনি রাজা তৃতীয় চার্লসকে লিখেছেন: “গভীর শোক ও কষ্টের এই মুহূর্তে আপনার এবং আপনার শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমার শোক ও সমবেদনা জানাচ্ছি।”
বিশ্বে তার অবদানের কথা স্মরণ করে রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে যুক্তরাজ্যের জনগণ এবং কমনওয়েলথ ও অন্যান্য রাজ্যের জনগণের প্রতি তার ৭ দশকের সেবা, কর্তব্য ও নিষ্ঠার জন্য সর্বদা স্মরণ ও শ্রদ্ধা করা হবে।
রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, “সর্বশক্তিমান ঈশ্বর মহামান্য রাণীর বিদেহী আত্মাকে চির শান্তি ও পরিত্রাণ দিয়ে আশীর্বাদ করবেন এবং রাজপরিবারের সদস্যদের এবং যুক্তরাজ্যের শোকাহত জনগণকে এই ক্ষতি সহ্য করার সাহস ও দৃঢ়তা দান করবেন।”
অন্যদিকে, রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ ট্রাস এমপিকে লেখা শোক বার্তায় বলেন, ‘রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের আকস্মিক মৃত্যুতে আমি বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে এবং আমার পক্ষ থেকে আপনাকে গভীর শোক ও দুঃখ জানাচ্ছি, এবং আপনার মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের জনগণের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা ও সহানুভূতি জানাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের শুক্রবার জারি করা এক বিবৃতি বলা হয়, শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘আমাদের আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং প্রার্থনা শোকাহত রাজ পরিবারের সদস্য এবং যুক্তরাজ্যের শোকাহত জনগণের সাথে রয়েছে এবং আমরা মহামান্যের বিদেহী আত্মার চিরশান্তি ও পরিত্রাণের জন্য প্রার্থনা করছি।’
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেছেন যে, রানী শুধুমাত্র ২৫০ কোটি কমনওয়েলথ জনগণের স্তম্ভ এবং শক্তি ছিলেন না বরং তিনি করুণা, মর্যাদা, প্রজ্ঞা এবং সেবারও প্রতীক ছিলেন।
তিনি লিখেছেন, ‘বিশ্বের সমসাময়িক ইতিহাসে সবচেয়ে কিংবদন্তী এবং দীর্ঘতম রাজত্বকারী রাজা হিসাবে কর্তব্য, সেবা এবং ত্যাগের সর্বোচ্চ মান স্থাপন করেছেন এবং বিশ্বজুড়ে তার অগণিত মানুষের কাছে উৎসর্গের একটি অতুলনীয় উত্তরাধিকার রেখে গেছেন।’
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে, রানী তার দেশের নাগরিকদের জন্য অনুপ্রেরণা, সাহস এবং শক্তির একটি দুর্দান্ত উৎস হয়ে থাকবেন। বাঙালি জনগণের বাড়িতে তার দুটি ঐতিহাসিক রাজকীয় সফরের জন্য অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
তিনি আরো লিখেছেন, ‘যুক্তরাজ্যে মহামান্য রানী এবং আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি এবং অটোয়া ও কিংস্টনে দু’টি কমনওয়েলথ সরকার প্রধানের বৈঠক চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
‘আমি লন্ডনে ২০১৮ সিএইচওজি -এ আমাদের শেষ ব্যক্তিগত আলাপচারিতার প্রশংসা করি।’ তিনি স্মরণ করেন।
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে রানী সবচেয়ে আবেগপূর্ণ বার্তা দিয়েছিলেন যেখানে তিনি লিখেছেন ‘আমরা বন্ধুত্ব এবং সম্পর্কের বন্ধন ধারণ করি, যা আমাদের অংশীদারিত্বের ভিত্তি হিসাবে রয়ে গেছে এবং পঞ্চাশ বছর আগের মতো আজো তা গুরুত্বপূর্ণ।’
‘দুটি কমনওয়েলথ দেশের মধ্যে সম্পর্ককে পুষ্ট করার মাধ্যমে এটিকে বারবার হৃদয় থেকে হৃদয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।’ তিনি যোগ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার দুঃখজনক মৃত্যুতে বাংলাদেশের মানুষ এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে শুধু একজন বিশ্বস্ত বন্ধুকেই হারালাম না। একজন প্রকৃত অভিভাবককেও হারিয়েছি।’
শেখ হাসিনা এই অপূরণীয় ক্ষতি সহ্য করার জন্য রাজ পরিবারের সদস্য এবং যুক্তরাজ্যের জনগণ, এবং কমনওয়েলথের সদস্যদের সাহস ও দৃঢ়তা দান করার জন্য প্রার্থনা করেছেন।
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ গত বৃহস্পতিবার স্কটল্যান্ডের বালমোরা ক্যাসেলে মারা যান।
তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।
সূত্র : বাসস