বিএনপির চলমান কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে ৩ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে দুই হাজারের অধিক নেতাকর্মী। এ ছাড়া গ্রেপ্তার হয়েছেন ২০০ জনের অধিক বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, নারায়ণগঞ্জে শেখ হাসিনার অবৈধ, অনির্বাচিত, ফ্যাসিবাদী সরকারের পুলিশের গুলিতে ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া যুবদল নেতা শাওনকে হত্যা ও সারা দেশে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী ও পুলিশ বিনা উসকানিতে বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে, সারা দেশে গতকাল বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ও অবৈধ সরকারের পুলিশ বাহিনী গতকালও ঠাকুরগাঁও জেলার রুহিয়া উপজেলা, কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়াসহ বেশ কয়েকটি জেলায় নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলার রুহিয়া উপজেলায় পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসী হামলায় প্রায় ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এছাড়াও কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলায় পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় প্রায় শতাধিক নেতাকর্মীকে আহত করেছে। পুলিশের গুলিতে আহত দুজনের অবস্থা সংকটাপন্ন।
এছাড়া সারা দেশে গত ২২ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিএনপির কর্মসূচিতে নিহত, আহত, গ্রেপ্তার ও ভাঙচুরের ঘটনা তুলে ধরেন বিএনপির মহাসচিব।
তিনি বলেন, সারা দেশে নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে প্রায়- ৪ হাজার ৮১ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। সারা দেশে অজ্ঞাত আসামি প্রায় ২০ হাজার। সভা-সমাবেশকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে ২০-২৫টি স্থানে। বাড়ি-ঘরে ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা করা হয়েছে প্রায় ৫০টি স্থানে।
তিনি আরও বলেন, সরকার যদি এই অশুভ তৎপরতা বন্ধ না করে; জনগণের যে ঐক্যের আন্দোলন শুরু হয়েছে, তা ক্রমান্বয়ে গণবিস্ফোরণে পরিণত হবে এবং গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করে এই সকল অপকর্মের সাথে যারা জড়িত তাদের বিচার করা হবে। সারা দেশে আহত নেতাকর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণবিরোধী কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার কর্তৃক বিদ্যুতের মূল্য, জ্বালানি তেল, পরিবহণ ভাড়াসহ সকল নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপি দেশব্যাপী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনরত অবস্থায় ভোলায় পুলিশ কর্তৃক বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে ছাত্রদল নেতা নূরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রহিমকে হত্যার মধ্য দিয়ে এই গণদাবিকে অগ্রাহ্যর মানসিকতা দেখিয়েছেন এই সরকার। সারা দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় হামলা করে হত্যা, আহত এবং মামলা ও গ্রেপ্তার নির্যাতনের সংক্ষিপ্ত তথ্য তুলে ধরেন তিনি।