প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার কাতারকে বাংলাদেশে স্থাপিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে জমি দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন।
কাতারের শ্রমমন্ত্রী ড. আলী বিন সাঈদ বিন স্মাইখ আল মারি বিকেলে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
পাশাপাশি শেখ হাসিনা জ্বালানি খাতে বিশেষ করে এলএনজি আমদানিতে উপসাগরীয় দেশটির আরও সহায়তা কামনা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী কাতারের শ্রমমন্ত্রীকে বলেন, বাংলাদেশ ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে। কাতার তাদের বিনিয়োগকারী এবং উদ্যোক্তাদের জন্য বৃহত্তর পরিসরে বিনিয়োগ করতে এসব অঞ্চলে জমি নিতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে কাতারের শ্রমমন্ত্রীর সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী কাতারের মন্ত্রীকে বলেন, চীন, জাপান, ভারত ও কোরিয়া ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি নিয়েছে এবং সেখানে শিল্প স্থাপনের জন্য কাজ করছে।
শেখ হাসিনা এলএনজি আমদানিতে কাতারের কাছে আরও সহযোগিতা চেয়েছেন। কাতারের মন্ত্রী জ্বালানি ও চিকিৎসা খাতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে তাঁর দেশের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বর্তমানে কাতার থেকে এলএনজি আমদানি করছি এবং এই খাতে আমাদের আরও সহযোগিতা প্রয়োজন।
একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী কাতার থেকে সার আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ঘনিষ্ঠ ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ হিসেবে কাতারের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ বিশেষ অগ্রাধিকার দেয়।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৭ সাল থেকে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা জোরপূর্বক বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, যা এখন বাংলাদেশের জন্য একটি বিশাল বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কাতারের কাছে সাহায্য চেয়ে বলেছেন, ‘ইসলামিক সম্মেলন সংস্থা (ওআইসি) এই ইস্যুতে বাংলাদেশকে সহায়তা দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরিত করেছে।
বাংলাদেশে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ‘তবে, আমরা খুব সতর্ক আছি,’ তিনি যোগ করেন।
ড. মারি তার দেশের আমির ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানান। ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ায় আগামী ২০ নভেম্বর থেকে সবকিছু শুরু হতে যাচ্ছে।
তিনি তাঁর দেশের উন্নয়নে বাংলাদেশি শ্রমিকদের অবদানের কথা স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে কাতারে ৪ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করছে, যা তার দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিদেশী সম্প্রদায়।
মন্ত্রী বলেন, জনবল ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর সঙ্গে তার ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুস ছালেহীন, কাতারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশে কাতারের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স সাঈদ আল সামিখ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র বাসস