12.8 C
Sydney

টপ নিউজশেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র জোরদার হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র জোরদার হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের তারিখঃ

নির্বাচনকে সামনে রেখে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে (ষড়যন্ত্র) করেছে। আবার ইলেকশন যতই সামনে আসছে, আবারও… মানে শেখ হাসিনাকে সরাতে হবে। তিনি বলেন, ‘তাদের কী লাভ হবে জানি না। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের তো ক্ষতিই হবে।’

বুধবার বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নব নির্বাচিত বোর্ড সদস‌্যদের সঙ্গে গণভবনে মতবিনিময়ের সময় তিনি এসব কথা বলেন।

তার বিরুদ্ধে সবসময় একটি ষড়যন্ত্র হচ্ছে— এমনটি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে রাসেলকে পর্যন্ত খুন করলো, সেই পরিবার থেকে আমি বেঁচে এসে সরকারে আসলাম। সাফল‌্য এনে দিলাম। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিলাম। এটা তো অনেকেই পছন্দ করবে না। কাজেই তারা তৎপর আছে সারাক্ষণই। আমি জানি, তাদের তৎপরতা অনেক বেশি। তবে যারা এই তৎপরতা চালাচ্ছেন, তাদের কার কী সে খবরও আমি রাখি। চিনি তো। আমার তো অচেনা কেউ নেই। তাদের বিষয়ও আমার জানা আছে। তারা তাদের চক্রান্ত করে যাচ্ছে।’

সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা তো এক একটা জিনিস টার্গেট করে কাজ করছি। যেমন কেউ ভূমিহীন থাকবে না। এটা জাতির পিতা শুরু করেছিলেন নোয়াখালী থেকে। আমি সেই দায়িত্বটা পালন করে যাচ্ছি। ‌প্রত্যেক ঘরে ঘরে আমরা বিদ্যুৎ দিয়েছিলাম। কিন্তু জ্বালানিসহ সবকিছুর দাম এত বেড়ে গেছে। এ কারণে আমাদের সাশ্রয়। কেবল আমরা না, সমগ্র ইউরোপ থেকে শুরু করে সব দেশে, এমনকি আমেরিকাও এখন জ্বালানি সাশ্রয় করে। আমরা আগাম ব‌্যবস্থা নিচ্ছি, যাতে ভবিষ‌্যতে আবার বিপদে না পড়তে হয়।’

তিনি বলেন, ‘আজকে এটা প্রমাণিত সত‌্য যে, আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের ভাগ‌্য পরিবর্তনে কেউ কাজ করেনি। করেও না। অবৈধভাবে যারা ক্ষমতা দখল করে, তারা ক্ষমতার চেয়ারটা কীভবে দখল করে রাখবে— ওই চিন্তায় ব‌্যস্ত থাকে। আমাদের কাছে এটা কোনও বড় বিষয় নয়। ক্ষমতাটা আমার কাছে জনগণের সেবা করার একটা সুযোগ। তো ক্ষমতা থাকলে আছে, না থাকলে নাই। থাকলে যেটা সুবিধা হয়— দেশের মানুষের জন‌্য কাজ করার একটা সুযোগ পাই। আর সেই সুযোগটা যতটুকু পারি কাজে লাগাই। আমি সেভাবেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আবার।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একেবাবে তৃণমূল মানুষের উন্নতি ও তাদের পরিবর্তনে কাজ করছি। ওইভাবে কিন্তু আমাদের যাত্রা শুরু করেছি। গ্রামের সাধারণ গরিব মানুষগুলো, তাদের জন‌্য আমার বাবা সারাজীবন কষ্ট করেছেন। কত অত‌্যাচার সহ‌্য করেছেন। জেল খেটেছেন। তাঁকে ফাঁসি দিয়ে হত‌্যার চেষ্টা হয়েছে। তিনি কিন্তু এই মানুষগুলোর ভাগ‌্য পরিবর্তন করতে চেয়েছেন। আর সেটাই আমরা করে যাচ্ছি।’

১৫ আগস্টের প্রসঙ্গে বক্তব‌্য দিতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘১৫ আগস্ট যারা মারা গেছেন, তাদের তো কাফন-দাফন কিছু হয়নি। কিন্তু আব্বার লাশটা যখন টুঙ্গিপাড়া নিয়ে গেছেন, তখন ওখানকার যে মাওলানা সাহেব এবং আমাদের কয়েকজন, তারা কিন্তু জোর করেছিলেন যে, না আমরা… সোজা আর্মি হেলিকপ্টারে করে সেখানে নিয়ে যায়। তারা কোনোমতে কবর খুঁড়ে মাটিচাপা দিয়েই চলে আসবে। যেহেতু আমাদের মসজিদের ঈমাম সাহেব, উনারা সবাই বলেন যে, আপনারা যদি মনে করেন— শহীদী ‍মৃত‌্যু,তাহলে ওভাবেই দিতে পারেন। তবে মুসলমানের লাশ, এটা তো একটু কাফন-দাফন দিতে হবে। সব এলাকায় কার্ফ্যু‌ ছিল। সব বন্ধ। টুঙ্গিপাড়ায় তখন কোনও দোকান ছিল না। যেতে হতো সেই পাটগাতী বাজারে। তখন রেডক্রসের যে কাপড় তিনি (বঙ্গবন্ধু) সাধারণ মানুষদের বিলাতেন, ওই কাপড় নিয়ে এসে তার পাড় ছিড়ে, সেটাই কিন্তু তিনি নিয়ে গেছেন। আর কিছু নেননি মানুষের কাছ থেকে। আর কিছুই নেননি। সেই রেডক্রসের কাপড় নিয়েই ওনার কাফন। এটা হলো বাস্তবতা। আমাদের আর যারা মারা গেছেন, তাদের তো কিছুই করা হয়নি। যে যে অবস্থায় ছিল, সেই অবস্থায় বনানী কবরস্থানে মাটি দেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। করোনা ভাইরাস মোকবিলা করেও আমাদের..তবে কৃচ্ছ্রতাসাধন করতে হবে। সঞ্চয় করতে হবে। একইঞ্চি জমি যাতে অনাবাদী না থাকে, সেই ব‌্যবস্থাও নিতে হবে। কারণ, একেতো করোনা, সেই সঙ্গে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। তারপর এই স‌্যাংশন, পাল্টা স‌্যাংশন। এই স‌্যাংশনের পরে তো সব জিনিসের দাম বাড়ছে। আমি জানি না, কারা লাভবান হচ্ছে এই যুদ্ধে। লাভবান হচ্ছে শুধু অস্ত্র যারা উৎপাদন করে, তারা লাভবান হচ্ছে। আর মরতেছে সাধারণ মানুষ। ছোট্ট শিশু থেকে শুরু করে আজ কী মানবতার জীবন! সেটাই সব থেকে দুঃখজনক।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রত‌্যেককে বলে দিচ্ছি। একইঞ্চি জমিও যেন পড়ে না থাকে। যে যা পারো লাগাও। একটা মরিচ গাছ লাগিয়ে খেলেও তো কাজে লাগে। এটা ঠিক আমাদের সবাই এটা করছে। এটা সবাইকে করতে হবে। খাদ‌্যটা যদি নিজে উৎপাদন করে ঠিক রাখতে পারি, তাহলে আমাদের পরমুখাপেক্ষী হতে হবে না। সেটা আমাদের সব থেকে বেশি কাজে লাগবে। এটাকে লক্ষ‌্য রেখে প্রচেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কেবল উঠে যাচ্ছিলাম। কিন্তু এর মধ‌্যে প্রথম আসলো করোনা। তারপর যুদ্ধ। এরপর স‌্যাংশন। পাল্টাপাল্টি স‌্যাংশন। যার জন‌্য আজকে সারা বিশ্বই অত‌্যন্ত এটকটা দুঃসময়ের মধ‌্যে যাচ্ছে। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। তারপরও বাংলাদেশ এখনও পর্যন্ত ভালো আছে। এককোটি মানুষকে আমরা স্বল্পমূল‌্য খাবার দিচ্ছি। কোনও মানুষ যেন কষ্টে না থাকে, সেটা আমাদের চেষ্টা। সেটাই আমরা করছি। সেই প্রচেষ্টা আমরা নিচ্ছি। এটা করে যাবো।’

সূত্র বাসস

সর্বশেষ

spot_img

জনপ্রিয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

ডেইলি মার্ক নিউজে জনপ্রিয়

ভারত-বাংলাদেশের যৌথ অংশগ্রহণে ব্রেমেনে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উদযাপন

মো. নাজিম উদ্দীন, ব্রেমেন প্রতিনিধি: বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিভা...

উজবেকিস্তানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনে গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারস্পরিক স্বার্থে উজবেকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ...

প্রধানমন্ত্রী আগামী সেপ্টেম্বরে ভারত সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে : মোমেন

পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী...

অস্ট্রেলিয়ায় ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির কোগরার ফ্রাই রিজার্ভ ও মিন্টুতে আজকের ঈদুল ফিতরের...

ডেইলি মার্ক নিউজে সর্বশেষ
Latest

রোহিঙ্গা বিষয়ে আসিয়ানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সিঙ্গাপুরের প্রতি ঢাকার আহ্বান

পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে টেকসই...

একনেকে ১,২২২.১৪ কোটি টাকার ৪টি প্রকল্প অনুমোদন

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) আজ মোট চারটি...

আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বিএনপি’র সমাবেশ শুরু

আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আয়োজিত...

মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য দেওয়ার আহ্বান জাতিসংঘ ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দলের

বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের আমন্ত্রণে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং...