স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে নাট-বল্টু খুলে ফেসবুক ভিডিও তৈরির ঘটনার সময় আটক বায়েজিদ তালহার সঙ্গে থাকা কাতার প্রবাসী কায়সারকে খুঁজছে পুলিশ।
এমনকি কায়সার যেন দেশত্যাগ করতে না পারে সেজন্য অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে বলেও সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল করিম (মাসুদ)।
এদিকে, বায়েজিদ তালহার গাড়ি জব্দ করেছে সিআইডি। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ সংবাদ মাধ্যমকে জানান, সোমবার রাতে বায়েজিদ তালহাদের শান্তিনগরের বাসা থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে। যেটি বায়েজিদের নামে নিবন্ধন করা রয়েছে।
পদ্মা সেতুর নাট খোলার প্রসঙ্গে বায়েজিদ এখনও মুখ খোলেননি বলেও জানান তিনি। বায়েজিদের সঙ্গে তার বন্ধু কায়সার ছিলেন বলে জানতে পেরেছেন তারা।
‘বায়েজিদের বন্ধু কায়সার নাট খোলার ভিডিও ধারণ করেন এবং তারা উভয়েই তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে থাকা অ্যাকাউন্টে সেই ভিডিও প্রকাশ করেন।’
সিআইডির এই পুলিশ সুপার আরও জানান, বছর দশেক আগে কাতার যান কায়সার। সেখানেই থাকেন তিনি। মাস খানেক আগে দেশে এসেছেন।
কায়সার যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন সে বিষয়ে অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে পদ্মা সেতুর রেলিং থেকে নাট খুলে নেয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলার সোমবার আসামি বায়েজিদ তালহার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন শরীয়তপুরের আদালত।
এর আগে রোববার সন্ধ্যায় পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের নাট খুলে টিকটক বানানো বায়েজিদ তালহাকে রাজধানীর শান্তিনগর থেকে আটক করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সিআইডি জানায়, পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের নাট খোলা ওই যুবকের নাম বায়েজিদ তালহা। তার বাড়ি পটুয়াখালীতে। তিনি রাজধানীতে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন।
উল্লেখ্য, কাইসার ৭১ (Kaisar71) নামক একটি টিকটক অ্যাকাউন্টের লোগো লাগানো সেতুর রেলিংয়ের নাট খোলার ৩৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবক পদ্মা সেতুর কংক্রিটের রেলিংয়ের ওপর দিয়ে লোহার রেলিংয়ের দুটি নাট খুলছেন। এই নাট দুটি দিয়ে লোহার রেলিংটি আটকানো রয়েছে কংক্রিটের রেলিংয়ের সঙ্গে। এরপর সেই যুবক নাট দুটি বাঁহাত দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে খুলে ডানহাতে নেন এবং আবার বাঁহাতের ওপর রাখেন।
নাট দুটি খুলে হাতের ওপর রেখে বলেন, ‘এই হলো আমাদের পদ্মা সেতু। আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু।’ এ সময় পাশ থেকে আরেকজনকে বলতে শোনা যায়, ‘নাট খুলে ভাইরাল করে দিয়েন না।’
ভিডিওটি বায়েজিদের টিকটক অ্যাকউন্টে আপলোড করার পর ফেসবুকেও সেটি ভাইরাল হয়। তবে রোববার বিকেলে এই অ্যাকাউন্টে ‘প্রাইভেট’ করা অবস্থায় দেখা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা। ওই যুবকের এমন কাণ্ড দেখে তার শাস্তি দাবি করেন অনেকেই।