পদ্মা সেতুকে সাহস, সংকল্প ও সমৃদ্ধির প্রতীক বলে আখ্যা দিয়েছেন ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।
পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়ে এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, পদ্মা সেতু একটি সংকল্পের প্রতীক। সেতুটি শুধু বাস্তবায়নই হয়নি, বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে এর শতভাগ নির্মিত হয়েছে। এতে প্রতীয়মান হয়, যদি সাহসের কোনো সীমা না থাকে, তবে আকাশ তার সীমা।
ঢাকায় চীনা দূতাবাসের ফেসবুক পেজের নিয়মিত আয়োজন ‘রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এক মিনিট’ অনুষ্ঠানে শুক্রবার রাষ্ট্রদূতের ভিডিও বার্তাটি প্রচার করা হয়েছে।
লি জিমিং বলেন, ‘আগামীকাল একটি মহৎ দিন! বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা বহুমুখী সেতু অবশেষে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে, আর এক দশকের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে! এ পর্যায়ে আমি এই অসামান্য অর্জনের জন্য বাংলাদেশের জনগণকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাতে চাই! আজ আমার কাছে রয়েছে থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি এই ক্ষুদ্রাকৃতির পদ্মা সেতু। সেতুটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়নকারী কোম্পানি চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ বা এমবিইসি এটিকে আমার কাছে একটি স্মারক হিসেবে পাঠিয়েছে।’
বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রশংসা করে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, সেতুটি আমার কাছে সাহসের একটি প্রতীক। স্বল্পোন্নত দেশ বাংলাদেশ এমন সেতু নির্মাণ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল। তারপরও বাংলাদেশের মানুষ তাদের স্বপ্ন অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। আজ সেতুটি শুধু বাস্তবায়নই হয়নি, বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে এর শতভাগ নির্মিত হয়েছে। এতে প্রতীয়মান হয় যে যদি সাহসের কোনো সীমা না থাকে, তবে আকাশ তার সীমা।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, পদ্মা সেতু একটি সংকল্পের প্রতীক। সেতুটি নির্মাণে সময় লেগেছে আট বছর; শক্তিশালী পদ্মার স্রোতোধারার ওপর এর অবয়ব একটি গল্প বলছে যে কীভাবে মানব প্রকৌশল প্রকৃতির শক্তিকে জয় করেছে। নদী হয়তো হাজার বছর ধরে বহমান, কিন্তু এর চেয়ে বেশি টেকসই হলো সেই মানুষের অধ্যবসায়, যাঁরা একদম শূন্য থেকে সেতুটি তৈরি করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘পদ্মা সেতু সমৃদ্ধিরও প্রতীক। বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে সেতুটি বাংলাদেশের জিডিপি ১ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করতে পারে এবং বাংলাদেশের অর্ধেক জনসংখ্যাকে উপকৃত করতে পারে। এটি কেবল এ দেশ এবং অঞ্চলকে সংযুক্ত করবে না, বরং অভিন্ন সমৃদ্ধি এবং একটি সমন্বিত ভবিষ্যতের পথে পরিচালিত করার মাধ্যমে আমাদের দুই দেশের মানুষকে হৃদয় দিয়ে সংযুক্ত করবে।’
শনিবার সকাল ১০টায় পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতুটি উদ্বোধন করে গাড়িতে করে সেতুর ওপর দিয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে বিশাল জনসভায় যোগ দেবেন তিনি। যান চলাচলের জন্য রবিবার খুলে দেওয়া হবে পদ্মা সেতু।