দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা শুরু হয়েছে, এই বন্যা দক্ষিণাঞ্চলেও বিস্তৃত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই অবস্থায় উদ্বোধনের জন্য অপেক্ষায় থাকা স্বপ্নের পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য আশীর্বাদ হবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার নিজ কার্যালয়ের শাপলা হলে আন্তর্জাতিক ক্রীড়াক্ষেত্রে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনা ক্রীড়াবিদদের মাঝে সম্মাননার চেক বিতরণকালে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২৫ তারিখে পদ্মা সেতু আমরা উদ্বোধন করবো ইনশাআল্লাহ এবং এই উদ্বোধনের পরে এটাও আল্লাহর একটা আশীর্বাদ হবে। কেননা, দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগটা আমরা অব্যাহত রাখতে পারবো।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি মনে করি, পদ্মা সেতু এমন একটা সময় উদ্বোধন করতে যাচ্ছি, সে সময় বন্যা শুরু হয়ে গেছে এবং এই বন্যা কিন্তু দক্ষিণাঞ্চলেও যাবে। সে সময় পণ্য পরিবহন, বন্যা মোকাবিলা, বন্যার সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদেরকে সহযোগিতা করার একটা বিরাট সুযোগ আমাদের আসবে। বন্যার্তদের রিলিফ দেওয়া থেকে ওষুধ সরবরাহ এবং খাদ্য সরবরাহের বিষয়টি আরও সহজতর হবে।’
১৯৮৮ সালের বন্যায় গোপালগঞ্জে আটকা পড়ার কথা স্মরণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘তখন এরকম পদ্মা সেতু থাকলে সহজেই চলে আসা সম্ভব হতো।’
১৯৯৮ সালের বন্যার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘ঠিক সেই বন্যার আগেই আমরা যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু উদ্বোধন করেছিলাম। আর সেটা করেছিলাম বলেই উত্তরবঙ্গ থেকে পণ্য পরিবহনসহ সকল কাজের সুবিধা হয়।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘সেই সময় বিবিসি, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রচার ছিল- সে বন্যায় প্রায় দুই কোটি লোক না খেতে পেয়ে মারা যাবে। কিন্তু আমরা বলেছিলাম, একজন মানুষকেও সরকার না খেয়ে মরতে দেবে না এবং সেটা সম্ভব হয়েছিল। আর এই কাজে সেই সেতুটা তখন বিরাট কাজে এসেছিল।’
বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার সবধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার পাশাপাশি জীবনমানও স্বাভাবিক রাখতে হবে। বন্যায় মানুষের যেন কষ্ট না হয় সেজন্য সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। বন্যার্তদের উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বন্যার পানি নামার সময় দেশের অন্য এলাকাও প্লাবিত হতে পারে। সেজন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি (বাফুফে) কাজী মো. সালাহউদ্দিন, মহিলা অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক মারিয়া মান্দা এবং বাংলাদেশ শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ফয়সাল খান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
স্বাগত বক্তৃতা করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম।