জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় তিনদিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এসময় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব,মো:আবুল মনসুর উপস্থিত ছিলেন।
নজরুল জন্মবার্ষিকীতে এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘বিদ্রোহী’র শতবর্ষ’।
বুধবার সকাল সাড়ে ৬ টায় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও সচিবের নেতৃত্বে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়,কবি নজরুল ইনস্টিটিউটসহ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থাসমূহ কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে। এ বছর জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান হবে নজরুল স্মৃতিবিজড়িত কুমিল্লায়।
কুমিল্লার বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে (টাউন হল) সকাল ১১ টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন (রিমি), কুমিল্লার সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহার ও কবিপৌত্রী খিলখিল কাজী। স্বাগত বক্তৃতা করবেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: আবুল মনসুর। স্মারক বক্তৃতা করবেন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও নজরুল গবেষক শান্তিরঞ্জন ভৌমিক। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করবেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান।
অন্যদিকে, ঢাকাসহ জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশাল কুমিল্লার দৌলতপুর, মানিকগঞ্জের তেওতা, চুয়াডাঙ্গার কার্পাসডাঙ্গা এবং চট্টগ্রামে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষে নজরুল মেলা, নজরুল বিষয়ক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে স্থানীয় প্রশাসন।
এসব কর্মসূচির অংশ হিসেবে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার দরিরামপুরে জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার প্রথম দিনের আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আশরাফ আলী খান খসরু এবং বিশেষ অতিথি থাকবেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোঃ হাফেজ রুহুল আমীন মাদানী। নজরুল স্মারক বক্তা থাকবেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. শামসুদ্দিন চৌধুরী। দ্বিতীয় দিনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল উপস্থিত থাকবেন । নজরুল স্মারক বক্তা থাকবেন লেখক ও নজরুল গবেষক এ এফ এম হায়াতুল্লাহ। সমাপনী দিনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোঃ মোসলেম উদ্দিন। নজরুল স্মারক বক্তা থাকবেন লেখক ও নজরুল গবেষক এবং জাতীয় কবির দৌহিত্রী খিলখিল কাজী।
কুমিল্লায় দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহার এবং বিশেষ অতিথি থাকবেন কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রশাসক রিয়ার এডমিরাল (অব.) আবু তাহের। নজরুল স্মারক বক্তা করবেন কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ জাকীর হোসেন। তৃতীয় দিনে অনুষ্ঠানমালায় প্রধান অতিথি থাকবেন খান। নজরুল স্মারক বক্তা করবেন লেখক ও নজরুল গবেষক এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান এ এফ এম হায়াতুল্লাহ।
চুয়াডাঙ্গা উপজেলার দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গায় দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার প্রথম দিন আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সংসদ সদস্য মোঃ আলী আজগার এবং বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব সুব্রত ভৌমিক। প্রধান আলোচক থাকবেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মোঃ হামিদুর রহমান। দ্বিতীয় দিনের প্রধান অতিথি থাকবেন সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের চেয়ারপারসন ও সাবেক সিনিয়র সচিব মোঃ আব্দুস সামাদ এবং বিশেষ অতিথি থাকবেন দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো: আশরাফ উদ্দিন।
এছাড়া মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার তেওতাতে জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় দিনব্যাপী আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
২৫ মে, রাজধানীর ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট আয়োজন করেছে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি ও উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কবি কামাল চৌধুরী। সভাপতিত্ব করবেন কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ জাকীর হোসেন। কবি নজরুল ইনস্টিটিউট বাংলা একাডেমির সহযোগিতায় জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণিকা ও পোস্টার মুদ্রণ করেছে। কবি নজরুল ইনস্টিটিউটসহ সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সকল দপ্তর ও সংস্থাসমূহ এ উপলক্ষে বিশেষ আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দিবসটি উপলক্ষে ঢাকাসহ দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আলোচনা সভা, রচনা ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে দিবসটি উদ্যাপন করা হবে।
বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহ যথাযথ কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করবে।
এছাড়া যে সকল জেলায় জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নজরুল জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে না, সে সকল জেলার জেলা প্রশাসকগণ স্থানীয় সংসদ সদস্য জনপ্রতিনিধি ও সুধীজনের সহযোগিতায় কমিটি গঠন করে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন করবে। জাতীয় পর্যায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানমালা বাংলাদেশ বেতার, বেসরকারি বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশন টেলিভিশন চ্যানেলসমূহ সম্প্রচার করবে।
নজরুল জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জাতীয় পর্যায়ের মূল অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানসমূহে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এসব স্থানের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সেছাড়া কবির স্মৃতিবিজড়িত জেলাসমূহসহ সকল জেলায় জাতীয় কবির ছবি, কবিতা, পরিচিতি ও চিত্রকর্ম প্রদর্শন এবং বিভিন্ন সড়কে ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার ও ডিজিটাল ডিসপ্লে স্থাপন এবং আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হবে।
সূত্র বাসস