মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ ও কংগ্রেসম্যান স্টিভ চ্যাবোট ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরো জোরদার করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি’র নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতকালে তারা এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় বাংলাদেশ দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সব কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিলে সিনেটর ও কংগ্রেসম্যানের নিজ নিজ কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. সহিদুল ইসলাম ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিনিধিদলের অন্যান্য সদস্যরা হচ্ছেন- নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, নাহিম রাজ্জাক এমপি’ এবং কাজী নাবিল আহমেদ এমপি।
বৈঠকে প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সম্পর্কে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের অবহিত করেন।
এ ছাড়াও প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দক্ষ কভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা এবং গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার আরো উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
বৈঠকে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মার্কিন মানবিক ও রাজনৈতিক সমর্থনের কথা উল্লেখ করেন।
প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গাদের নিজ দেশের রাখাইন রাজ্যে নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টিসহ সম্ভাব্য সব উপায়ে রাজি করাতে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের প্রতি অনুরোধ জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা শরনার্থীদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের উদারতার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দেন।
সংসদীয় প্রতিনিধিদল এ ছাড়া বাংলাদেশকে ৬৪ মিলিয়ন ডোজ কভিড-১৯ ভ্যাকসিন অনুদানের জন্য মার্কিন সরকারের প্রশংসা করেন ।
সংসদীয় প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের ব্যবসাবান্ধব বিভিন্ন বৈচিত্র্যময় খাতে বিনিয়োগ আরো বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের কাছে পৌছে দেন।
প্রতিনিধি দলের নেতা ফারুক খান বাংলাদেশের শতভাগ বিদ্যুতায়নের মাইলফলক অর্জনের কথা উল্লেখ করে এ ক্ষেত্রে অবদান রাখায় টেক্সাস-ভিত্তিক যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি কোম্পানিগুলোর প্রশংসা করেন।
বৈঠকে উভয় পক্ষই ভবিষ্যতে দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতার সম্প্রসারণ ও বহুমুখী অংশীদারিত্ব আরও গভীর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সিনেট কমিটির পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক সদস্য সিনেটর টেড ক্রুজ দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ করে টেক্সাস রাজ্য জ্বালানি খাতে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে আরও সম্পৃক্ত হতে আগ্রহী।
প্রতিনিধি দল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে প্রত্যর্পণের জন্য বাংলাদেশের অনুরোধ পুনর্ব্যক্ত করেন ।
এছাড়া র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের সমর্থনও কামনা করেন। প্রতিনিধিদরের সদস্যরা বলেন, র্যাব চরমপন্থা, সন্ত্রাসবাদ এবং মাদক ও মানব পাচারসহ আন্তঃসীমান্ত অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অসাধারণ অবদান রাখছে।
সংসদীয় দল কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য কংগ্রেসম্যান চ্যাবোটের সমর্থন চেয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া বিষয়ক প্রভাবশালী হাউস পররাষ্ট্র বিষয়ক উপ-কমিটির র্যাংকিং সদস্য কংগ্রেসম্যান স্টিভ চ্যাবোট কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসের কো-চেয়ার হিসেবে প্রস্তাবিত ককাসের নেতৃত্ব দেয়ার জন্য তার প্রস্তুতির কথা জানান।
তিনি বলেন, ককাস বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে সাহায্য করবে।
সংসদীয় প্রতিনিধিদল আগামীকাল কংগ্রেসম্যান ডুয়াইট ইভান্সের সঙ্গে সাক্ষাত এবং উভয় দেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনার কথা রয়েছে।
সূত্র বাসস