মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের আবেদন নিয়ে গণভোট আয়োজনের পরিকল্পনা সুইডেন সরকারের নেই বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ম্যাগদালিয়েনা আন্দেসন।
দেশটির পার্লামেন্ট ওই আবেদন নিয়ে অগ্রসর হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী আন্দেসন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ইউক্রেইনে রাশিয়ার আক্রমণ সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকে ‘সামরিকভাবে নিরপেক্ষ থাকাই জাতীয় স্বার্থের জন্য সবচেয়ে ভালো’ দীর্ঘদিনের এমন বিশ্বাস যাচাই-বাছাইয়ে বাধ্য করেছে।
উভয় দেশই আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ন্যাটো সদস্যপদের জন্য আবেদন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ সদস্যপদের আবেদন নিয়ে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাবকে ‘বাজে চিন্তা’ বলছেন আন্দেসন।
“এই ইস্যু গণভোটের জন্য উপযুক্ত বলে মনে করি না আমি। জাতীয় নিরাপত্তার অনেক তথ্য আছে যা গোপনীয়, এ ধরনের গণভোটের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু থাকে যেগুলো নিয়ে আলোচনা করা যাবে না এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো আলোচনার টেবিলে তোলাও যাবে না,” বলেছেন তিনি।
সুইডেনের পার্লামেন্ট এখন দেশের নিরাপত্তা নীতি পর্যালোচনা করে দেখছে, মে-র মাঝামাঝি তাদের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনও দেওয়ার কথা।
আন্দেসনের নিজের দল সোশাল ডেমোক্র্যাট পার্টিও ন্যাটো সদস্যপদ নিয়ে তাদের আপত্তি তুলে নেওয়ার কথা ভাবছে।
সুইডেনের পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন থাকলেও ৩০ দেশের ন্যাটো জোটের সদস্যপদের জন্য সুইডেনের আবেদনের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন সোশাল ডেমোক্র্যাট পার্টিকেই বড় বাধা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পার্লামেন্টের সবচেয়ে বড় বিরোধী দল মধ্যপন্থিদের নেতাও ন্যাটো সদস্যপদের আবেদন নিয়ে গণভোট করার প্রস্তাব উড়িয়ে দিয়েছেন।
“ভোটাররা, রাশিয়া বিষয়ে কিছু জানে এমন নয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি যা ঘটেছে সুইডিশ ভোটাররা যে তা বুঝেছে, তা স্পষ্ট এবং তাদের উপসংহার টানাও হয়ে গেছে,” কয়েকদিন আগে লেফট পার্টির নেতা নুশি দাদগোস্তারের সঙ্গে এক বিতর্কের সময় দৈনিক আফতোনব্লাদেতকে এমনটাই বলেছেন বিরোধীদলীয় নেতা উলফ খ্রিস্তেরসন।
ন্যাটো সদস্যপদের বিরোধিতা করা বামপন্থি দলের নেতা দাদগোস্তার আফতোনব্লাদেতকে বলেছেন, সুইডেন মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটে যাবে কি যাবে না, এ বিষয়ে সুইডেনের নাগরিকদের মতামত জানানোর সুযোগ দেওয়া উচিত।
“এটা নিয়ে ভোটারদের কাছে যাওয়া উচিত। এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে দৃঢ় গণতান্ত্রিক সমর্থন থাকা দরকার,” বলেছেন তিনি।
এ বছরের সেপ্টেম্বরে সুইডেনে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা।
গত ২০ এপ্রিল দৈনিক আফতোনব্লাদেতে প্রকাশিত ন্যাটো সদস্যপদ নিয়ে দেমোস্কোপের এক জরিপের ফলাফলে দেখা গিয়েছিলো, সুইডেনের ৫৭ শতাংশ নাগরিক ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার পক্ষে তবে মার্চে এ সমর্থনের হার ছিল ৫১ শতাংশ।