মোঃ উবায়দুল্লাহ রুমি, ময়মনসিংহ থেকেঃ ‘ছোটবেলায় পড়ার খুব ইচ্ছে ছিল। টাকার অভাবে স্কুলে যেতে পারি নাই। এক বেলা ভাত খাইতে পারলেও আরেক বেলা খাইতে পারতাম না। মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজের সন্ধান খুঁজে বেড়িয়েছি। পড়াশোনা করি নাই, এখন মূর্খ হয়ে ভাঙারি ব্যবসা করে জীবিকা চালাই।’ কথাগুলো বলছিলেন ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামের বাসিন্দা ভাঙারি ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া (৬০)।
সেলিম মিয়া দীর্ঘ ২৬ বছর যাবৎ করছেন ভাঙারির ব্যবসা। প্রতিদিন সকালে ভাঙা একটি ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। বিভিন্ন এলাকায় ভ্যান চালিয়ে ভাঙা প্লাস্টিকের জিনিসপত্র, পরিত্যক্ত ভাঙা লোহা, পুরোনো বই-খাতা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কেনেন। এসব জিনিসপত্র বিকেলে পার্শ্ববর্তী ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীগঞ্জ বাজারে বিক্রি করে বাড়ি ফেরেন। এর থেকে যা আয় করেন, তার থেকে কিছু টাকা দিয়ে সংসারের খরচ চলে।সেলিম মিয়ার সংসারে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তিনি প্রতিদিন ভাঙারি কেনাবেচা করে ২০০-৩০০ টাকা আয় রোজগার করেন। আগে চললেও এ অর্থ দিয়ে এখন সংসার চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে তাঁর। টাকার অভাবে সন্তানদের পড়াশোনা করাতে পারেননি বলেও জানান তিনি।
সেলিম মিয়া বলেন, কী করব বাপু, আর টানতে পারছি না। প্রতিদিন সকালে বাড়ি বের হয়ে ভ্যান চালিয়ে ঘুরি। তেমন ভাঙ্গারি জিনিসপত্র পাই না। বয়স হয়েছে, শরীরেও আর কুলাই না। তবু পেটের দায়ে বের হতে হয়।
সাবিনা আক্তার নামের এক গৃহিণী বলেন, এখন তো সবাই মজবুত জিনিসপত্র কেনে, এত সহজে নষ্ট হয় না। যেগুলো নষ্ট হয় তা কম দামে হকারের কাছে বিক্রি করে দিই। এঁরা শুধু আমাদের উপকার করে না, পরিবেশটাকেও ভালো রাখে।