চাঁদপুর সদরের ১০ নম্বর লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম খানের ‘অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তার দাখিলকৃত সম্পদের হিসাবও অনুসন্ধান করা হচ্ছে। অনুসন্ধানের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সব তথ্য-উপাত্ত তলব করেছে সংস্থাটি।
দুদক জানায়, চেয়ারম্যান সেলিম খানের নামে সম্পদ, স্ত্রী-সন্তান ও তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের মালিকানাধীন নৌযানের সংখ্যা ও মূল্য, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের রেকর্ডপত্র, পদ্ম-মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলনের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সেলিম খানকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে কিনা সে সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র তলব করা হয়েছে। এসব তথ্য ১০ এপ্রিলের মধ্যে দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। দুদকের নির্দেশনা অনুযায়ী সেলিম খানের কোথায়, কি পরিমাণ সম্পত্তি আছে তার অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
দুদক বলছে, ২০১৫ সাল থেকে মৎস্য চাষ করে আসছেন বলে তথ্য দাখিল করেছেন সেলিম খান। অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সেলিম খানের মৎস্য চাষ সংক্রান্ত তথ্যাদি ও রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে পর্যালোচনা প্রয়োজন। সেলিম খান মৎস্য চাষ করেন কিনা সে সংক্রান্ত তথ্যাদি, যদি করেন তাহলে কত সাল থেকে করছেন, কি পরিমাণ জমিতে কতটি পুকুর রয়েছে, পুকুরে কোন কোন প্রজাতির মাছ চাষ করা হয়েছে, ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মৎস্য চাষে বিনিয়োগ ও বার্ষিক আয় সংবলিত সরেজমিন পরিদর্শন প্রতিবেদন প্রয়োজন। এসব তথ্য ১০ এপ্রিলের মধ্যে দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার কাছে পাঠানোর জন্য চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
চেয়ারম্যান সেলিম খানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে দুদকে। তবে পদ্মা-মেঘনায় ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন-বিক্রি এবং সম্প্রতি চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণের সুযোগে অর্থ লোপাটের চেষ্টাকালে সেলিম খান ও তার পরিবারের নাম উঠে আসে।
এ অবস্থায় তার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান সরকারকে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সেলিম খানের সম্পদ অনুসন্ধানের জন্য বিভিন্ন দফতরে নথিপত্র চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান সরকার বলেন, ‘আমাদের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। চাঁদপুর ছাড়াও যেখানে যেখানে সেলিম খানের সম্পদ রয়েছে সবকিছু অনুসন্ধানের আওতায় থাকবে। সব রেকর্ডপত্র সংগ্রহের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, চাঁদপুরের নদী অঞ্চল থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানসহ একটি চক্রের বিরুদ্ধে। এমনকি অনুমতি ছাড়াই চেয়ারম্যান বছরের পর বছর বালু বিক্রি করেছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। দীর্ঘদিন বালু ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।