গাজায় অসহায় মানুষের ওপর অমানবিক নির্যাতনকারী ইসরাইলি সেনাদের মধ্যে কেউ সন্তানের বাবা, কেউ বৃদ্ধ মায়ের শেষ সম্বল, আবার কেউ বোনের আদরের একমাত্র ছোট ভাই। সেই মানুষ গুলো যখন গাজায় নিরীহ নারী-শিশুদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে নিজ পরিবারের কাছে ফিরে আসছেন, তখন ভুগছেন মানসিক অবসাদে। গাজায় নেতানিয়াহুর নির্দেশ পালন করতে গিয়ে আহত হয়ে নিজ দেশে ফিরে যাওয়া অনেক আইডিএফ সদস্য আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়।
গাজায় যুদ্ধে অংশ নেওয়া ইসরাইলি সৈন্যরা সিএনএনকে জানিয়েছেন, গাজার যে নৃশংসতা তারা দেখেছেন, তা বাইরের মানুষ কল্পনাও করতে পারবেন না।
প্রতিবেদন থেকে আরো জানা গেছে, আইডিএফের অনেক সেনা বর্তমানে মানসিক অবসাদে ভুগছেন। ফেরত আসা সৈন্যদের এখন অনেকেই মাংস খেতেও ভয় পান। মাংস খেতে গেলেই গাজায় রক্তাক্ত লাশের কথা মনে হয় তাদের। তারা রাতে ঠিকমতো ঘুমাতেও পারেন না মানসিক অশান্তির কারণে।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক চিকিৎসক সিএনএন’কে জানিয়েছেন, অনেক সৈন্যকে এখন গাজা থেকে লেবাননে পাঠানো হতে পারে। ইসরাইলের বহু সৈন্য এখন এই আশঙ্কায় আছেন। ইসরাইলি বাহিনীর বহু সেনাসদস্য প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সরকারকে একণ আর বিশ্বাস করেন না।
শুধু তাই নয়, দেশের প্রতি আনুগত্য আর মানবতার মধ্যে দোদুল্যমান অবস্থায় আছেন এসব সৈন্যরা। গাজা ভূ-খন্ডে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় একনো পর্যন্ত ৪৩ হাজারেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এদের
বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ১ লক্ষেরও বেশি।
জাতিসংঘের হিসেবে গাজায় ১৬ হাজারেরও বেশি শিশু নিহত হয়েছে।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাস যোদ্ধারা গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় ইসরাইলের ১২০৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয় এবং ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে জিম্মি করে হামাস যোদ্ধারা। এ হামলার জবাবে সেদিনই অবরুদ্ধ গাজায় হামলা চালাতে শুরু করে ইসরাইলি সেনাবাহিনী।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অব্যাহত এ হামলায় প্রায় ৪৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লক্ষেরও বেশি।