বিএনপি ভারতের সঙ্গে শত্রুতা করে অবিশ্বাস সৃষ্টি করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘ভারতের সাথে শত্রুতা করে বিএনপি দেশের ক্ষতি করেছে। আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে দেশের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।’
ওবায়দুল কাদের আজ শনিবার বিকেলে মোহাম্মদপুরের গজনবী রোডে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা বন্ধুত্ব চাই। শত্রুতা আমাদের ক্ষতি করেছে। আমরা সে অবস্থায় আর ফিরে যেতে চাই না। ভারত আমাদের বন্ধু। তাই আমরা অনেক কিছু দেশটির কাছ থেকে আদায় করতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ‘ভারত বিরোধিতা বিএনপির দ্বিচারিতা। তারা নিজেরাই যে ভারতের দালাল, এর অসংখ্য উদাহরণ আছে। আওয়ামী লীগের শক্তি বাংলাদেশের জনগণ, বিদেশি কোনো দেশ আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস নয়।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের সঙ্গে ২১ বছর শত্রুতা করে আমাদের লাভ হয়নি। বিএনপি শত্রুতা করে সংশয়, অবিশ্বাস সৃষ্টি করেছিল। সে কারণে সম্পর্কের উন্নতি হয়নি। শেখ হাসিনা সে অবিশ্বাসের দেয়াল ভেঙে দিয়েছেন।
ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন চুক্তির কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা বলতে চাই, গঙ্গার পানি শেখ হাসিনাই এনেছেন। পানি চুক্তি কে করেছেন? শেখ হাসিনা। সীমান্ত সমস্যার চুক্তি কে করেছেন? শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের মতো আরেকটি বাংলাদেশ আমরা সমুদ্র পেয়েছি আদালতের মাধ্যমে।
বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সমালোচনা করে তিনি বলেন, শুক্রবার পল্টনে গয়েশ্বর চন্দ্র এক পসরা মিথ্যাচার করে গেছেন। গয়েশ্বর বাবু কোথায় ছিলেন এতদিন? কোথা থেকে এলেন? কোথায় পালিয়ে ছিলেন? ভারতে? মাথায় উঠেছে গান্ধী টুপি। এখন ভন্ডামি শুরু করেছেন। গয়েশ্বর কাল পল্টনে দাঁড়িয়ে আমাদের বলে ভারতের দালাল। এই অপবাদ তো আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া দিয়েছে।
ভারতে গিয়ে গঙ্গার পানির কথা ভুলে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া, সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করল, আপনি ভারত সফর করলেন গঙ্গার পানির কি হলো? তিনি বললেন আমি তো ভুলে গেছি। দালাল কারা?
নির্বাচনে ৪২ শতাংশ লোক ভোট দিয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার উন্নয়ন অর্জনকে স্বীকৃতি দিয়েছে বাংলাদেশের ৪২ শতাংশ ভোটার। এই নির্বাচনে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। উপজেলা নির্বাচন জনগণ নাকি প্রত্যাখ্যান করেছে। তাহলে ৩৬ থেকে ৪০ শতাংশ লোক ভোট দিল তারা কারা? তারা এই দেশের জনগণ। তারা উন্নয়নে, অর্জনে মুগ্ধ।
দন্ডিত পলাতক আসামি তারেক রহমান যত দিন বিএনপির নেতৃত্বে থাকবে ততদিন দলটি সংসদে যেতে পারবে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, তারেক রহমানের কারণেই দলটির নেতারা হতাশায় ভুগছেন। তারেকই চায় না দলটি নির্বাচনে আসুক। সে নেতৃত্বে থাকলে বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। তাই তারেক রহমান যত দিন বিএনপির নেতৃত্বে থাকবে ততদিন দলটি সংসদে আসতে পারবে না।
তিনি বলেন, আন্দোলন ও নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি আবারও দেশে বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। কোনো বিশৃঙ্খলা মেনে নেয়া হবে না।
বিএনপির প্রতি প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, কীসের আন্দোলন করতে চান? আপনাদের আন্দোলনের হেতু কি? সরকারের পরিবর্তন নির্বাচনের মাধ্যমে সম্ভব, নির্বাচন ছাড়া কখনো সম্ভব না। আরেকটি আছে অগণতান্ত্রিক পন্থায়। এদেশের মানুষ সেটা কখনো চায় না।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম ও আফজাল হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লায়লী এবং দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াও বক্তব্য রাখেন।