বঙ্গবাজার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
তবে, এখনো থেমে থেমে আগুন জ্বলছে এবং চারদিকে কালো ধোয়া দেখা যাচ্ছে। আগুন সম্পূর্ণরূপে নেভাতে আরও সময় লাগবে। দমকল বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ,স্থানীয় ব্যবসায়ী, ওই এলাকার বাসিন্দা এবং বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগুন নেভানোর কাজ চলছে।
ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার লিমা খানম বাসসকে বলেন, দমকল বাহিনীর মোট ৪৮টি ইউনিট আগুন নেভাতে একনাগাড়ে প্রায় সাড়ে ৬ঘন্টা প্রয়াসে ‘দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
তিনি জনান, আজ সকাল ৬টা ১০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। সকাল ৬টা ১২ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায় । এরপর একে-একে ৪৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে।
ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সম্মিলিত ও বিমান বাহিনীর সাহায্যকারী দল ও একটি হেলিকপ্টার কাজ করছে। এছাড়া বঙ্গবাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বর্ডার গার্ড বালাদেশ (বিজিবি), পুলিশ, র্যাব সদস্য, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও লোকজন এবং সংস্থার সেচ্ছাসেবী দল কাজ করছে।
আইএসপিআর’র সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান বাসস’কে বলেন, ভয়াবহ এই অগ্নিকান্ড শুরুর পরপরই সেনাবাহিনীর সম্মিলিত সাহায্যকারী দল সেখানে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ অব্যাহত রাখে। এর পাশাপাশি সেখানে বিমান বাহিনীর একটি সাহায্যকারী দল ও একটি হেলিকপ্টার কাজ করে।
আগুন লাগার খবর পেয়ে মার্কেটের ব্যবসায়ীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যে যার মতো করে দোকান থেকে জিনিসপত্র বের করে আনার চেষ্টা করেন। সকালে আগুনের খবর পেয়ে অনেক ব্যবসায়ী ঘটনাস্থলে এসে আহাজারি শুরু করেন। অনেকে জিনিসপত্র বের করতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। মার্কেটে বিভিন্ন রকমের কাপড় থাকায় আগুনের ব্যাপকতা অনেক বেশি ছিল। তবে প্রথম দিকে অনেক ব্যবসায়ী তাদের মালামাল বের করতে সক্ষম হন। তারা ভ্যান ও পিকআপ ভ্যান দিয়ে মালামাল সরিয়ে নিয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কথা বললেও এর আগেই বঙ্গ মার্কেটের বেশিরভাগ দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বঙ্গবাজারে অন্তত ছয়টি মার্কেটে আগুন লাগে। এর মধ্যে শুধু বঙ্গ মার্কেটেই প্রায় ৩ হাজার দোকান রয়েছে।
বঙ্গবাজার মার্কেট, ইসলামিয়া মার্কেট, বঙ্গ মার্কেট, আদর্শ মার্কেট- এই চারটি মার্কেট এক জায়গায় হওয়ায় মূলত সবগুলোকেই লোকজন বঙ্গবাজার মার্কেট হিসেবে চিনে। এখান থেকে রাস্তার উল্টো পাশে এনেক্সকো ও বঙ্গো হোমিও মার্কেটেও আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল।
বঙ্গবাজারের ৩৫০ নম্বর দোকানের ব্যবসায়ী মামুন জানান, এই অগ্নিকান্ডে ৪ থেকে ৫ হাজারের মতো দোকান পুড়ে গেছে। এর ফলে কোটি কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে তারা আশঙ্কা করছেন।
এদিকে বঙ্গবাজারের এনেক্সকো টাওয়ারে ৫ থেকে ৭ তলা পর্যন্ত পুড়েছে। সেখানে প্রত্যেক তলায় ১১৫টির মতো দোকান রয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।