আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে আঘাত হানা ৬ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পে কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছে। কম্পনটি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি পর্যন্ত অনুভূত হয়েছে।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, ভূমিকম্পে উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে কমপক্ষে ৯ জন নিহত এবং ৪৪ জন আহত হয়েছে বলে বুধবার একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন। উত্তর খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের হাসপাতালগুলোতে রাতারাতি জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
আফগানিস্তানে কমপক্ষে চারজন নিহত এবং ৫০ জন আহত হয়েছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, পাকিস্তান ও তাজিকিস্তানের সীমান্তবর্তী আফগান শহর জুর্মের ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল।
ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় সিসমোলজিক্যাল সেন্টার জানিয়েছে, পাকিস্তান, ভারত, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, আফগানিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের প্রায় ২৮৫ মিলিয়ন মানুষ এবং ১ হাজার কিলোমিটার চওড়া এলাকা জুড়ে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়েছিল।
পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ ৬ দশমিক ৮ মাত্রার সামান্য বেশি এবং পরে আফগানিস্তানের সঙ্গে দেশের সীমান্তবর্তী হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৩ দশমিক ৭ মাত্রার আফটারশকের কথা জানিয়েছে।
দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পাকিস্তানের ১১২২ রেসকিউ সার্ভিসের মুখপাত্র বিলাল ফাইজি এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা বাতা সংস্থা এপিকে বলেছেন, উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন অংশে ছাদ ধসে পড়ায় নয়জন নিহত হয়েছেন।
তিনি আল-জাজিরাকে বলেছেন, ‘সোয়াতের একটি ১০ বছর বয়সী মেয়ে এবং লোয়ার দিরের ২৪ বছর বয়সী এক লোক মারা গেছে। উভয়েরই নিজেদের বাড়ির দেয়াল ধসে মৃত্যু হয়েছে।’
ফাইজির মতে, রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে ১৮০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে সোয়াত জেলায় ভূমিধসের কারণে ক্ষতি হয়েছে। ঝাঁকুনির কারণে ২০টিরও বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে।
খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের সোয়াত উপত্যকার হাসপাতালগুলো কমপক্ষে ২৫০ জন রোগীকে চিকিত্সা করেছে, যাদের মধ্যে ১৫ জন সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত এবং ২০০ জনের বেশি অচেতন ছিল। প্রদেশের অন্যান্য অংশে ৫২ জন আহত হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ভূমিকম্পের পর দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন।