ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র্র মোদি বলেছেন, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন দুই দেশের মধ্যে শক্তি নিরাপত্তায় সহযোগিতা বাড়াবে।
তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে এই পাইপলাইনটি বাংলাদেশের উন্নয়নকে আরও ত্বরান্বিত করবে এবং উভয় দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংযোগের একটি চমৎকার উদাহরণ হয়ে থাকবে।’
আজ সন্ধ্যায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যৌথভাবে আন্তঃসীমান্ত জ্বালানি পাইপলাইন ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদি এই মন্তব্য করেন।
দুই দেশের মধ্যে ১৩০ কিলোমিটার পাইপলাইনটি আনুমানিক ৩৭৭ কোটি ভারতীয় রুপি ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে।
বাংলাদেশের ব্যাপক অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক ভারতীয় এটি নিয়ে গর্বিত এবং আমরা আনন্দিত যে আমরা বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় অবদান রাখতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে সূচনা করা হয়। তিনি বলেন, এই পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল সরবরাহের খরচ কমবে এবং সরবরাহের কার্বন ফুটপ্রিন্টও কমবে।
দুই বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশীর মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধির তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, দুই দেশ একসঙ্গে এ ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি অর্জন করেছে।
রেল যোগাযোগ স্থাপন সম্পর্কে তিনি বলেন, দু’দেশের মধ্যে রেল যোগাযোগ রেল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বাংলাদেশে কোভিড ভ্যাকসিন এবং অক্সিজেন প্রেরণে সহায়তা করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার দূরদৃষ্টির জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকীর একদিন পর এ পাইপলাইনের উদ্বোধন হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকীর একদিন পর আজকের এ উদ্বোধনকে এক শুভ সমাপতন বলে উল্লেখ করেন।
তিনি অরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’ রূপকল্পে সমগ্র অঞ্চলের সম্প্রীতি উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই যৌথ প্রকল্পটি সে দৃষ্টিভঙ্গির একটি নিখুঁত দৃষ্টান্ত।
মোদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই প্রকল্পের বিষয়ে তার সার্বক্ষণিক দিকনির্দেশনার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং দুই দেশের জনগণের স্বার্থে তার সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাওয়র ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
কর্মকর্তারা এখানে বলেছেন, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইনটির বাস্তবায়ন দু’দেশের মধ্যে চলমান জ্বালানি সহযোগিতা বাড়াবে এবং বাংলাদেশে, বিশেষ করে কৃষিখাতে আরও প্রবৃদ্ধি ঘটাবে।
পাইপলাইনটির বার্ষিক ১ (এক) মিলিয়ন মেট্রিক টন (এমএমটিপিএ) হাই-স্পিড ডিজেল (এইচএসডি) পরিবহনের ক্ষমতা রয়েছে। এটি প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের সাতটি জেলায় উচ্চ গতির ডিজেল সরবরাহ করবে।
কর্মকর্তারা আরও বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন’-এর কার্যক্রম ভারত থেকে বাংলাদেশে এইচএসডি পরিবহনের একটি টেকসই, নির্ভরযোগ্য, সাশ্রয়ী ও পরিবেশ-বান্ধব ব্যবস্থা কার্যকর করবে।
পাইপলাইনটি পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে আসাম ভিত্তিক নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেডের (এনআরএল) মার্কেটিং টার্মিনাল থেকে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) পার্বতীপুর ডিপোতে ডিজেল বহন করবে।
ভারতের নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড ও বাংলাদেশের মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।