সিনিয়রদের পর এবার সাফ শিরোপা জয় করল অনুর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল দল। আজ কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সাফ অনুর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে অপরাজিত থেকে শিরোপা জয় করেছে বাংলাদেশের বয়স ভিত্তিক দলটি। এর আগে নেপালের দশরথ রঙ্গশালায় নেপালকে হারিয়ে সিনিয়র বিভাগের শিরোপা ঘরে তুলেছিল সাবিনা খাতুনের দল।
এবার অনুর্ধ্ব ২০ চ্যাম্পিয়নশীপে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। ম্যাচের প্রথমার্ধেই শাহেদা আক্তার রিপা ও শামসুন্নাহার জুনিয়রের গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় গোলাম রব্বানি ছোটনের শিষ্যরা। দ্বিতীয়ার্ধে স্বাগতিক দলের হয়ে তৃতীয়টি গোল করেন বদলী খেলোয়াড় উন্নতি খাতুন।
ম্যাচের ১৮তম মিনিটে প্রথম পরিকল্পিত আক্রমন রচনা করে বাংলাদেশ। ডান প্রান্ত দিয়ে শাহেদা আক্তার রিপার ক্রসের বল ডি বক্সে পেয়ে যান স্বাগতিক স্ট্রাইকার আকলিমা খাতুন। তার ডান পায়ের মাটি কামড়ানো শট সফরকারী দলের রক্ষন বিভাগের তুলাশা বুহারের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল পোস্টে প্রবেশের সময় সেটি লুফে নেয়ার চেস্টা করেন গোল রক্ষক কবিতা। প্রথম দফায় হাত ফস্কে বল বেরিয়ে যায়। তবে সেখানে বাংলাদেশের কোন খেলোয়াড় না থাকায় দ্বিতীয় প্রচেস্টায় বলটি গ্রীবে পুরে নেন নেপালী গোল রক্ষক।
পরের মিনিটে আবারো আক্রমনে যায় বাংলাদেশ। এ দফায় ইতি খাতুনের ক্রসের বল ডি বক্সে নিয়ন্ত্রনে নিতে ব্যর্থ হন আকলিমা। ফলে গোল রক্ষককে একা পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি তিনি।
ম্যাচের ৩৫ মিনিটে গোলের সুযোগ নস্ট করে নেপাল। মমতা পুনের ক্রসের বল ডি বক্সে পেয়ে সেটিতে শট নেন সফরকারী দলের ৯ নম্বর জার্সি পরিহিত আমিশা কার্কি। তবে তার ডান পায়ের শটের বলটি বাংলাদেশী গোল পোস্টের সাইডবার ঘেষে বাইরে চলে যায়।
তিন মিনিট পর ৩৮ মিনিটে আবারো আক্রমন করে বাংলাদেশ। মাঝমাঠ থেকে মাহফুজা খাতুনের পাসের বল ডি বক্সের ভেতর থেকে শট নেন রিপা। বলটি ডান দিকে লাফিয়ে ফিরিয়ে দেন সফরকারী গোল রক্ষক।
তবে ৪২ মিনিটে ঠিকই গোল করেন রিপা। স্বপ্না রানির পাসের বল প্রথম দফায় ডি বক্সে হাতছাড়া করেন তিনি। কিন্তু সফরকারীদের রক্ষনের ভুলে ফের বলটি পান রিপা। এবার ডান পায়ের জোড়ালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন রিপা (১-০)। তিন মিনিটের ইনজুরি টাইমের শুরুতেই ফের গোল করে বাংলাদেশকে দ্বিগুন ব্যবধানে পৌঁছে দেন অধিনায়ক শামসুন্নাহার জুনিয়র। ৪৬ মিনিটে রক্ষন থেকে উড়ে আসা বল ডি বক্সের বাইরে থেকে রিসিভ করে দ্রুত গতিতে নেপালী বক্সের ভেতর ঢুকে পড়েন তিনি। এ সময় নেপালের গোল রক্ষক প্রতিহত করতে এগিয়ে এলে বল প্লেসিং শটে জালে জড়ান স্বাগতিক অধিনায়ক (২-০)। এটি ছিল টুর্নামেন্টে শামসুন্নাহারের পঞ্চম গোল। এর মাধ্যমে দুই গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় গোলাম রব্বানি ছোটনের শিষ্যরা।
ম্যাচের ৮৭ মিনিটে পাওয়া ফ্রি কিকে রিপার পাস থেকে আকলিমা খাতুনের ক্রসের বল একেবারে নেপালি গোল বক্সের সামনে থেকে আলতো ছোঁয়ায় জালে জড়ান বদলী খেলোয়াড় উন্নতি খাতুন (৩-০)। ইনজুরি টাইমে (৯০+২) আরো একটি গোলের সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। কর্নারের বলে শামসুন্নাহার হেড করলেও সেটি পোস্টের বাইরে চলে যায়। ফলে ৩-০ গোলের জয় নিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল দল।
টুর্নামেন্টে সেরা গোল রক্ষকের পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশের গোল রক্ষক রূপনা চাকমা। সর্বোচ্চ গোলদাতা আসরের ৫ গোল করা বাংলাদেশ অধিনায়ক শামসুন্নাহার জুনিয়র। মোস্ট ভ্যাল্যুয়েবল খেলোয়াড়ের পুরস্কারও শামসুন্নাহারের হাতে।
খেলা শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি।