রাশিয়ার দখলকৃত দোনেৎস্ক অঞ্চলের মাকিভকা শহরের একটি ভবনে মারাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে কিয়েভ। হামলায় এখন পর্যন্ত ৮৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। রুশ প্রতিরক্সা মন্ত্রণালয় এই হামলার জন্য সেনাদের সেল ফোন ব্যবহারকে দায়ি করেছে।
রয়টার্স জানায়, বুধবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ভবনটিতে সেনারা অবৈধভাবে সেল ফোন ব্যবহারে করছিল। ফলে ইউক্রেন সহজেই তাদের ট্র্যাক করতে সক্ষম হয় এবং জঘন্যতম এই হামলা চালায়।
সোমবার ইউক্রেন দাবি করেছিল হামলায় প্রায় ৪০০ রুশ সেনা নিহত হয়েছে। তবে মস্কো জানিয়েছিল, সপ্তাহান্তে হামলায় ৬৩ সেনা নিহত হয়েছে। সর্বশেষ ধ্বংসস্তূপ থেকে ৮৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ছড়িয়ে পড়া বেশিরভাগ ক্ষোভ রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের পরিবর্তে সামরিক কমান্ডারদের দিকেই পরিচালিত হয়েছে। তারা সাম্প্রতিক মাসগুলিতে বড় যুদ্ধক্ষেত্রের পশ্চাদপসরণ করার পরে এই হামলাটি ঘটেছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চারটি ইউক্রেনীয় ক্ষেপণাস্ত্র পূর্ব ইউক্রেনের রুশ-অধিকৃত আঞ্চলিক রাজধানী দোনেৎস্কের যমজ শহর মাকিভকার ভোকেশনাল কলেজে একটি অস্থায়ী রুশ ব্যারাকে আঘাত করেছে। ঘটনার অফিশিয়াল তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তবে হামলার মূল কারণটি স্পষ্টতই পরিষেবাকর্মীদের অবৈধ মোবাইল ফোন ব্যবহার।
বুধবার রাত ১টায় জারি করা এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘এই ফ্যাক্টরটি শত্রুকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য সৈন্যদের অবস্থানের স্থানাঙ্ক ট্র্যাক করতে এবং নির্ধারণ করতে সহায়তা করেছে।’
২০২২ সালের শেষের দিকে পুতিন কর্তৃক অর্ডার অব কারেজ পুরষ্কার প্রাপ্ত একজন বিশিষ্ট রাশিয়ান যুদ্ধ সংবাদদাতা সেমিয়ন পেগভ মন্ত্রণালয়ের যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। একটি টেলিগ্রাম পোস্টে তিনি বলেন, ইউক্রেন ড্রোন এবং বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে সৈন্যদের শনাক্ত করতে সক্ষম হতে পারত, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অগত্যা নয়।
পেগভ আরও বলেন, ‘মোবাইল’ গল্পটি খুব বিশ্বাসযোগ্য নয়। আমি এটি খুব কমই বলি- তবে এটি এমন ঘটনা যখন অন্তত তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নীরব থাকা ভাল হবে। যেমন এটি দোষারোপ করার সম্পূর্ণ প্রচেষ্টা বলে মনে হচ্ছে। হতাহতের সংখ্যাও আরও বাড়তে পারে।
ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি খুব কমই নির্দিষ্ট ইউক্রেনীয় সামরিক হামলার বিষয়ে মন্তব্য করেন। মঙ্গলবার একটি ভিডিও বার্তায় তিনি হামলার বিষয়ে কোনও উল্লেখ করেননি।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা একটি হামলা চালিয়েছে যার ফলে মাকিভকার কাছে রাশিয়ান সরঞ্জাম এবং সম্ভবত কর্মীদের ক্ষতি হয়েছে। তবে তারা এর বেশি কিছু জানায়নি।
রাশিয়ান জাতীয়তাবাদী ব্লগার এবং এই অঞ্চলের কিছু রাশিয়ানপন্থী কর্মকর্তারা মাকিভকা মৃতের সংখ্যা একশ’র মধ্যে রেখেছেন, যদিও কেউ কেউ এই অনুমানগুলি অতিরঞ্জিত বলে মন্তব্য করছেন।