বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, আদানি পাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তির আওতায় আগামী মার্চের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।
মঙ্গলবার ভারতের ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় আদানির নির্মাণাধীন ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৮০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার দুটি ইউনিট পরিদর্শন করার পরে তিনি বলেন, এখন আমরা আদানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পরীক্ষামূলক ভিত্তিতে ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছি এবং মার্চ মাসে রোহনপুরের মাধ্যমে ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে।
আদানি গ্রুপ ভারত থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য একটি ডেডিকেটেড ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণ করেছে উল্লেখ করে নসরুল বলেন, মার্চের মাঝামাঝি থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা সম্ভব হবে এবং জুনের মধ্যে আমরা ১,৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাব।
তিনি বলেন, আগামী গ্রীষ্মের চাহিদা মেটাতে আমাদের আরও বিদ্যুতের প্রয়োজন, কারণ ১০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ডিজেলচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যায়ক্রমে বন্ধ করা হবে। আমরা জ্বালানির বিকল্প বিভিন্ন উৎসও খুঁজছি এবং সাশ্রয়ী মূল্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য কাজ করছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার এ অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।
২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর ভারতের গোড্ডা জেলার ঝাড়খন্ডে কয়লা চালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে ১৪৯৬ মেগাওয়াট (নেট) বিদ্যুৎ আমদানির জন্য বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) এবং আদানি পাওয়ার (ঝাড়খন্ড) লিমিটেডের মধ্যে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) স্বাক্ষরিত হয়।
ইতোমধ্যে ডেডিকেটেড ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানী অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও বগুড়ায় দুটি সাবস্টেশন ও অন্যান্য ট্রান্সমিশন ব্যবস্থা নির্মাণ করেছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান এবং বিপিডিবির চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান এবং আদানি পাওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস. অনিল সারদানা পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে অবিহিত করতে গিয়ে অনিল সারদানা বলেন, আদানি ১৬০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট নিয়ে অতি-সুপারক্রিটিকাল প্রযুক্তি পদ্ধতির কয়লা-চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে।
তিনি বলেন, স্থানীয় কয়লা ব্যবহার করে উৎপাদিত বিদ্যুৎ রপ্তানি না করার জন্য ভারত সরকারের নীতির কারণে, আমরা প্ল্যান্টের জন্য অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আনছি। এই মুহূর্তে কয়লার দাম বাড়ছে তাই বিদ্যুতের দাম কয়লার শুল্ক উপর নির্ভরশীল। ভবিষ্যতে কয়লার দাম কমলে বিদ্যুতের দামও কমবে।
এক প্রশ্নের জবাবে অনিল সারদানা বলেন, আদানি গ্রুপ বিদ্যুৎ সরবরাহ না করায় এখনো বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে কোন অর্থ পায়নি।