ঢাকায় নিযুক্ত কিছু কূটনীতিকের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বলে মনে করছেন দেশের মানবাধিকার কর্মীরা। সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে মৌলানা আকরম খাঁ হলে ঢাকার কূটনীতিকদের অভ্যন্তরীণ ও পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের বিষয়ে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মানবাধিকার কর্মীরা তাদের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি সিদ্দিকুর রহমান মিয়া বলেন, ‘জাতিসংঘ জেনেভা কনভেনশনের আলোকে একজন কূটনীতিকের দায়িত্ব, কর্তব্য, আচরণ সুস্পষ্ট উলেস্নখ রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কূটনীতিকরা তাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে দায়িত্ব পালন করছেন। যেসব কূটনীতিক বাংলাদেশের মানবাধিকার, নির্বাচন ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আচরণবিধি-বহির্ভূত মন্তব্য-বিবৃতি প্রদান করেন তাদের দেশে কি এভাবে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারে? উন্নয়নের অংশীদার ও বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে যে কোনো সুপরামর্শ অবশ্যই গ্রহণযোগ্য; অনধিকারচর্চাও নিন্দনীয়।’
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ আবেদ আলী বলেন, ‘কূটনীতিকদের গতিবিধি ও মন্তব্যগুলো লক্ষ করছি। তারা একটি বিশেষ মহলকে সহায়তার উদ্দেশ্যে কূটনৈতিক আচরণ পরিপন্থি কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘গত ২৫ নভেম্বর ব্রিটিশ হাইকমিশনার, স্পেনের রাষ্ট্রদূত, সুইডেনের ডেপুটি রাষ্ট্রদূত, জাপানের মিনিস্টার কাউন্সিলর গুলশানে বিএনপি নেতা ডক্টর মঈন খানের সঙ্গে একটি সভায় যোগ
দেন। এর পরেই ৬ ডিসেম্বর ১৫টি দেশের কূটনীতিকদের যৌথ বিবৃতি, নিখোঁজ হওয়া ছাত্রদলের সাবেক এক নেতার বাসায় ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের উপস্থিতি, পল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বিবৃতিসহ বিভিন্ন বিষয় আমাদের কাছে উদ্বেগজনক ও পক্ষপাতদুষ্ট বলে মনে হয়েছে।’
মোহাম্মদ আবেদ আলী আরও বলেন, ‘কূটনীতিকদের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ ও দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, মানবাধিকার এবং নির্বাচন বিষয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্যে আমরা মানবাধিকার কর্মীরা ও নাগরিক সমাজ উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং বিশেষ রাজনৈতিক দলের স্বার্থসিদ্ধির ভূমিকায় অবতীর্ণ না হওয়ার জন্য কূটনীতিকদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক ধর্ম ও পানিসম্পদমন্ত্রী এম নাজিম উদ্দীন আল আজাদ, বুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর আব্দুল জব্বার খান, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর আহম্মদ আবুল কালাম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাড. আবুল হাশেম, সংগঠনের আজীবন সদস্য ইকবাল হোসেন প্রমুখ।