প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সফল-জনপ্রিয় নেতা, সফল কূটনীতিক উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই দুঃসময়ে যার ঘুম হয় না। জিজ্ঞেস করেছিলাম, কতক্ষণ ঘুমান। তিনি বললেন, ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা। বয়স হয়েছে। মাত্র ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা ঘুমান।’
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলনে এ কথা বলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, জবাব দিতে হবে। এই খুনিদের কারা পুরস্কৃত করল, এই খুনিদের কারা নিরাপদে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিলো, বিদেশি দূতাবাসে চাকরি দিলো। কে? জিয়াউর রহমান। এই খুনিদের বিচার হবে না, এই মর্মে আইন করলো। কে? সেনাপতি জিয়াউর রহমান।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষকে টিকা দিয়েছেন বিনা পয়সায়, সংকট সামলেছেন। বাংলাদেশ আবারও ঘুরে দাঁড়াবে শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে। উন্নত বিশ্বে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ। আজকে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে নেমে সর্বশেষ ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ। রপ্তানি আয় বেড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পেয়েছে।
‘যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া সারা বিশ্বে প্রভাব ফেলেছে। আমি মনে করি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সঠিক পথে আছেন, সব সামলিয়ে যাচ্ছেন’, যোগ করেন ওবায়দুল কাদের।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে বেলুন উড়িয়ে তিনি সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে সম্মেলন সঞ্চালনা করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
বিতর্কিত কর্মকাণ্ড থেকে বেরিয়ে এসে ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনার আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, ‘আজ দেখি অনেকেই এই নেতাকে ওই নেতাকে ধারণ করে, মেইনটেইন করে। এক নেতা অন্য নেতাকে কিসের মেইনটেইন করবে? একটা কথা পরিষ্কারভাবে বলি—বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আদর্শ এবং তাদেরকে ধারণ করা ছাড়া আর অন্য কাউকে মেইনটেইন করা যাবে না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গত ৪৭ বছরের সবচেয়ে সাহসী ও দক্ষ নেতৃত্বের নাম শেখ হাসিনা। গত ৪৭ বছরের সবচেয়ে দক্ষ কূটনীতিকের নাম শেখ হাসিনা। তিনি হলেন সংকটের ক্রাইসিস ম্যানেজার।’
বিজয়ের মাসে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহবান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১০ ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। যাতে করে বিএনপি-জামায়াত সাম্প্রদায়িক অপশক্তি দেশের মধ্যে কোনো বিশৃঙ্খলা করতে না পারে। শেখ হাসিনার উন্নয়ন দেখে তাদের জ্বালা বেড়েছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের অপশক্তির বিরুদ্ধে খেলা হবে। এজন্য সকলকে প্রস্তুত থাকতে হবে। আগামীকাল (বুধবার) থেকেই সকল পাড়ায়-মহল্লার, থানা-ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পাহারা দিতে হবে।
‘কারণ জনগণের জানমাল রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। বিএনপি যাতে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে এজন্য সকলকে সতর্ক হতে হবে। বিএনপি শুধু দেশের বিরুদ্ধে বিদেশির কাছে নালিশ করে। তারা হলো নালিশ পার্টি।’
সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা উপস্থিত আছেন।