হাওয়া ভবন থেকে যত টাকা পাচার হয়েছে তা ফেরত আনা হবে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, তারেক রহমান রাজনীতি করবেন না বলে লন্ডনে পাড়ি জমিয়েছে। এফবিআই এর কাছে ধরা খেয়েছে তারেক রহমান, সে সিঙ্গাপুরসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার করেছে। হাওয়া ভবন থেকে কত টাকা পাচার হয়েছে তার হিসাব হচ্ছে, ফেরত আনা হবে।
ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার দুপুেের গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কে আয়োজিত জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারেক লন্ডনে বসে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তাই তারেকের হাওয়া ভবনের অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে খেলা হবে। সারা বাংলাদেশ থেকে কত টাকা পাচার করা হয়েছে শেখ হাসিনা তা খতিয়ে দেখছেন। সব টাকা উদ্ধার করা হবে। টাকা পাচারকারী তারেক রহমানসহ যারাই আছে প্রত্যেকের টাকা উদ্ধার করা হবে।
বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আহবান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফখরুল সাহেব বলেছেন, সরকারকে নিরাপদ প্রস্থান নিতে। আমি বলতে চাই নিরাপদ প্রস্থানের একমাত্র পথ হচ্ছে নির্বাচন। নির্বাচনেই প্রমাণ হবে, কারা বিজয়ী হবে আর কাদের পতন হবে। সরকার পতনের হাকডাক দিয়ে কোন লাভ নেই।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনে খেলা হবে, ডিসেম্বরে খেলা হবে, বিএনপি’র আগুন আর লাঠি বিরুদ্ধে খেলা হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে দশ তারিখে খেলা হবে। হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে খেলা হবে।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু উনারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন না। ফখরুলের মুখে মধু আর অন্তরে বিষ। এরই নাম ফখরুল। ফখরুল সাহেব-অনুমতি দেয়া হয়েছে। আপনাদের মিটিংয়ে কেউ বাধা দেবে না।
ওবায়দুল কাদের হুশিয়ারী দিয়ে বলেছেন, সমাবেশের অনুমতি দেয়ার পরেও যদি বাড়াবাড়ি করেন, লাফালাফি করেন, আগুন নিয়ে নামেন, লাঠির সঙ্গে জাতীয় পতাকা লাগিয়ে মাঠে নামেন তাহলে খবর আছে। খেলা হবে দারুণ। পাল্টাপাল্টি আমরা করবো না। আমরা শান্তি চাই। আমরা ক্ষমতায় আছি। ক্ষমতায় থেকে আমরা অশান্তি কেন করবো। মানুষকে কেন আতংকে রাখবো। আমরা তো মানুষকে শান্তিতে রাখতে চাই। আমরা ক্ষমতায় আছি অশান্তি হলে তো সেখানে মাথা ঘামাতে হবে।
বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্বের কি অবস্থা। যুদ্ধের জন্য নিষেধাজ্ঞার জন্য আমরা আজকে একটু বিপদে আছি। মানুষ কষ্টে আছে। অভাবী মানুষ, সাধারণ মানুষ, স্বল্প আয়ের মানুষ কষ্টে আছে। এটা শেখ হাসিনা নিজেই স্বীকার করেন। চেষ্টা করছেন তিনি। এখানো বাংলাদেশে সোমালিয়া সুদানের মতো দুর্ভিক্ষ হয়নি। এখনো আমরা অনেক দেশের তুলনায় ভাল আছি। শেখ হাসিনা ভালো থাকলে বাংলাদেশ ভাল থাকবে।
গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে বেলা ১২ টা ১০ মিনিটে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন উদ্বোধন করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মাঠে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
তিনি বলেন, বিএনপি কোন রাজনৈতিক দল নয়। এ দলের সৃষ্টি হলো ক্যান্টনমেন্টে। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সংবিধানকে হত্যা করেছে। জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের জেল থেকে মুক্তি দিয়ে হত্যার রাজনীতি শুরু করেছিলো।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা ঐক্যবদ্ধ। তারা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোন শক্তিই আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে পারবে না।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীন। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নার্গিস রহমান উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী এমদাদুল হক ও সঞ্চালনায় করেন সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান।
সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি মাহাববু আলী খানকে সভাপতি ও জিএম সিহাবউদ্দিন আজমকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন।