23.1 C
Sydney

টপ নিউজজনগণ বিদ্যুৎ পাবে, তবে ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

জনগণ বিদ্যুৎ পাবে, তবে ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের তারিখঃ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং কোভিড-১৯ মহামারীর ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকটের কারণে জ্বালানি খাতে কঠোরতা দেখাতে বাধ্য হওয়া সত্ত্বেও তাঁর সরকার বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখায় দেশবাসী বিদ্যুৎ পাবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা এবং করোনাভাইরাস জনিত কারণে আকাশছোঁয়া মূল্যস্ফীতি পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধিও ফলে আমাদের মিতব্যয়ী হতে হচ্ছে। এর মানে এই নয় দেশবাসী বিদ্যুৎ পাবে না। তারা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন এবং পাবেন। তবে, এক্ষেত্রে সবাইকে একটু মিতব্যয়ী হতে হবে।’

শেখ হাসিনা বুধবার সকালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র (আরএনপিপি)-এর ইউনিট-২ এর রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল বা পরমাণু চুল্লী পাত্র স্থাপন অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে এ কথা বলেন।

তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আয়োজিত মুল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

সরকার প্রধান বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল সবাইকে বিদ্যুৎ দেওয়ার এবং আমরা সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পেরেছি। প্রতিটি ঘরে আলো জেলে সমগ্র বাংলাদেশকে আমরা আলোকিত করেছি।’

তিনি বলেন, এর ফলে আজকে উন্নত দেশগুলোও হিমসিম খাচ্ছে এবং তারাও সাশ্রয়ের দিকে নজর দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেকেরই উপলব্ধি করা উচিত যে বিশ্ব একটি গ্লোবাল ভিলেজ এবং একে অন্যের ওপর উপর নির্ভরশীল। কাজেই বিশ্বব্যাপী চলমান মন্দার অভিঘাত বাংলাদেশেও যে পড়বে, সেটাই স্বাভাবিক বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এর আগে গত বছরের ১০ অক্টোবর, প্রধানমন্ত্রী আরএনপিপি’র প্রথম ইউনিটে আরপিভি উদ্বোধন করেছিলেন। প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালে ১,২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে একই পরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, রাশিয়ার পরমাণু শক্তি করপোরেশন (রোসাটম)-এর মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান। অনুষ্ঠানে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, বৈশ্বিক সংকটের কারণে অনেক উন্নত দেশে ও খাদ্যের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও এই ধরনের পরিস্থিতি বাংলাদেশে এখনো সৃষ্টি হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জনগণকে খাদ্য নিরাপত্তা দিচ্ছি। আমরা ন্যায্য মূল্যে খাবার কেনার জন্য ১ কোটি মানুষকে বিশেষ কার্ড দিয়েছি এবং যারা প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে অক্ষম তাদের বিনামূল্যে খাবার দিচ্ছি।’ তিনি বলেন, তাঁর সরকার অবশ্যই বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে। কারণ, সরকার কোভিড-১৯ মহামারীর চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবেলা করেছে।

সরকার প্রধান বলেন, ‘অনেকেই সমালোচনা করতে পারে, কিন্তু আমাদের এসব সমালোচনায় কর্ণপাত না করলেও চলবে, বরং আমরা দেশ ও জনগণের প্রতি আমাদের দায়িত্বটাই পালন করব।’

তিনি বলেন, অনেকেই অনেক কথা বলেছেন, কিন্তু পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তাকেই তাঁর সরকার প্রাধান্য দিয়েছিল। তাঁর সরকারের অগ্রাধিকার ছিল দেশবাসীর জীবন ও জীবিকা রক্ষার জন্য বাংলাদেশে চেরনোবিলের মতো কোনো পারমাণবিক দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করা।
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে আবারও আশ্বস্ত করেন যে, তাঁর সরকার পরিবেশ রক্ষায় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের ফলে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না।

তিনি বলেন, সরকার দেশবাসীর আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি নিশ্চিত করতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি গ্রাম পর্যায়ে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে কারণ, জাতির পিতা তাদের একটি সুন্দর জীবন দিতে তার সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।

দেশে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি ক্ষেত্রে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অবদান রাখবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বাংলাদেশের জন্য বিরাট অর্জনের দিন। এটা আমাদের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বাংলাদেশের মানুষের জন্য অত্যন্ত সম্মান বয়ে আনবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রূপপুর কেন্দ্র থেকে যে বিদ্যুৎ আসবে, সেটা উত্তরবঙ্গের জন্যই ব্যবহার হবে। তারাই লাভবান হবে বেশি। সেখানে শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। আরো বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। আর্থ-সামাজিক উন্নতি হবে।

শান্তি ও উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ পরমাণু শক্তির ব্যবহারে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র শুধু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নয়, এটা একটা দৃষ্টান্ত, আমরা এ ধরনের একটা কাজ করতে পারি। পরিবেশ ঠিক রেখে আমরা ২৪শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাচ্ছি। যা আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিরাট অবদান রাখবে।

বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে সহায়তা প্রদানের জন্য রাশিয়ার সরকার ও প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, শান্তি ও উন্নয়নের জন্য পারমাণবিক শক্তি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

সূত্র   বাসস ।

 

 

সর্বশেষ

spot_img

জনপ্রিয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

ডেইলি মার্ক নিউজে জনপ্রিয়

ভারত-বাংলাদেশের যৌথ অংশগ্রহণে ব্রেমেনে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উদযাপন

মো. নাজিম উদ্দীন, ব্রেমেন প্রতিনিধি: বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিভা...

উজবেকিস্তানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনে গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারস্পরিক স্বার্থে উজবেকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ...

প্রধানমন্ত্রী আগামী সেপ্টেম্বরে ভারত সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে : মোমেন

পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী...

অস্ট্রেলিয়ায় ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির কোগরার ফ্রাই রিজার্ভ ও মিন্টুতে আজকের ঈদুল ফিতরের...

ডেইলি মার্ক নিউজে সর্বশেষ
Latest

ট্রাম্পের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রস্তুত বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রস্তুত...

লেবাননের পূর্বাঞ্চলে ইসরাইলি হামলায় নিহত ৪০

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার প্রধান শহর বালবেকসহ দেশটির...

দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউস ট্রাম্পের

বিশ্বের কোটি কোটি মানুষকে তাক লাগিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে...

আমেরিকাকে ‘গৌরবের শিখরে’ পৌঁছে দেওয়ায় প্রতিশ্রুতি ট্রাম্পের

রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার তার প্রচারণার চূড়ান্ত...