মুন্সীগঞ্জ শহরের মুক্তারপুর এলাকায় বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে পুলিশ, সংবাদমাধ্যমকর্মীসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার বিকেলে ঘণ্টাব্যাপী চলে এই সংঘর্ষ। এ সময় ভাঙচুর করা হয় ছয়টি মোটরসাইকেল। কয়েকটিতে দেয়া হয় আগুনও।
আহতদের মধ্যে আছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিনহাজ-উল-ইসলাম, সদর থানার ওসি তারিকুজ্জামান, পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হক, এসআই কাজল দাস, এসআই মাঈনউদ্দিন, এসআই সুকান্ত বাউল, এসআই আমিনুল হাসান, এসআই অজিত, এসআই ইলিয়াস, কনস্টেবল রায়হান, দৈনিক সমকালের জেলা প্রতিনিধি কাজী সাব্বির আহমেদ দীপু, দৈনিক দিনকালের জেলা প্রতিনিধি গোলজার হোসেন এবং বিএনপির নেতাকর্মীরা।
আহতদের মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সদর উপজেলা, মুন্সীগঞ্জ শহর ও মিরকাদিম পৌর বিএনপি শহরের মুক্তারপুর এলাকার পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে।
বেলা আড়াইটার দিক থেকে সমাবেশে যোগ দিতে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয় আগে থেকেই। এ সময় পুলিশ মিছিলে বাধা দিলে বিভিন্ন মিছিল থেকে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু হয়। সে সময় পুলিশ ফাঁকা গুলি ও টিয়ার শেল ছোড়ে।
সদর থানার ওসি তারিকুজ্জামান জানান, অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সদর উপজেলা, মুন্সীগঞ্জ শহর ও মিরকাদিম পৌর বিএনপির নেতাকর্মীরা মুক্তারপুর ফেরিঘাট এলাকায় জড়ো হচ্ছিলেন। হঠাৎ পুলিশ আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। মিছিলের ব্যানার কেড়ে নেয় ও লাঠিচার্জ করে।
‘এতে নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়। আমাদের ৭০-৮০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে শাওন ও জাহাঙ্গীর মাদবর নামের দুই যুবককে আশঙ্কাজনকভাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে এমন কথা আমার জানা নেই।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব বলেন, ‘কোনো রকমের সভা-সমাবেশের অনুমতি ছিল না। অনুমতি ছাড়া তারা রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচলের বাধা দিচ্ছিল। তাদেরই দুই গ্রুপ নিজেরা নিজেরা মারামারি করছিল। এর কারণেই পুলিশ সরিয়ে দেয়ার জন্য গেছে।
‘এ সময় তারা পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা করেছে। পুলিশ তখন আত্মরক্ষায় ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আমাদের পুলিশের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা অনুমতি ছাড়া এই সমাবেশ করেছে, বিশৃঙ্খলা করেছে, তাদের সবার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটজনকে হেফাজতে নেয়া হয়েছে।’