দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এই সরকারের পতনের সাইরেন বাজতে শুরু করেছে।
জনগণের সম্মিলিত শক্তির কাছে এই সরকারের পতন এখন অতি সন্নিকটে।’ শুক্রবার এক বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে রাজশাহীর বাগমারায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের দোয়া মাহফিল এবং ময়মনসিংহে নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ আনেন মির্জা ফখরুল। পুলিশের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা এসব হামলা চালিয়েছে অভিযোগ করে অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাজশাহীর বাগমারায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা এক দোয়া মাহফিলের আয়োজন করার উদ্যোগ নিলে পুলিশ অনুষ্ঠানে আক্রমণ করে। এর আগের দিন বুধবার ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান বাচ্চুসহ অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীকে আহত করা হয়।’
হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজশাহীর বাগমারা ও ময়মনসিংহের পাগলার ঘটনা সরকারের পরিকল্পিত ও অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বর্তমানে সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অগ্নিমূল্য, অর্থ পাচার আর মহা দুর্নীতিতে এমনভাবে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে যে সেটিকে আড়াল করার জন্যই দেশব্যাপী সন্ত্রাসের পরিকাঠামো তৈরি করেছে। আর এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে প্রতিদিনই বিএনপির নেতা-কর্মীদের রক্ত ঝরছে। নিহত ও আহত হচ্ছেন বিএনপি অসংখ্য নেতা-কর্মী।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপির কর্মসূচির কথা শুনলেই আওয়ামী লীগ ও প্রশাসন বিচলিত হয়ে পড়ে। মনে হয়, তাদের পায়ের নিচের মাটি কাঁপতে শুরু করেছে। গণতন্ত্রকে উচ্ছেদ করে অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে এই সরকার নানা ধরনের সর্বনাশা সহিংস পন্থা অবলম্বন করেছে। প্রচণ্ডবেগে গণবিক্ষোভের বিস্ফোরণকে ঠেকানোর জন্যই দলীয় চেতনায় সাজানো প্রশাসন ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অবৈধ অস্ত্র দিয়ে মাঠে নামানো হয়েছে।’
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘পুলিশের কাছে অনুমতি নিয়ে বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্য দোয়ার অনুষ্ঠানের ওপর পুলিশ যে সন্ত্রাসী তাণ্ডব চালায় তা নজিরবিহীন। পুলিশ এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, তাঁরা বিএনপির উদ্যোগে ধর্মীয় অনুষ্ঠানকেও বানচাল করতে সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে। এই ঘটনায় সরকারের নৃশংস ফ্যাসিবাদের উগ্র রূপ প্রকাশ পেয়েছে। পাশাপাশি ময়মনসিংহ জেলার পাগলা উপজেলায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা এবং ৪০টি মোটরসাইকেল ভস্মীভূত করা এবং আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, তাঁর বৃদ্ধ মাতাসহ বিএনপির নেতাদের ওপর যে পৈশাচিক হামলা করা হয়েছে, তা বর্তমান অবৈধ সরকারের সন্ত্রাসনির্ভর অপরাজনীতির আরেকটি বর্ধিত প্রকাশ।’
