14.4 C
Sydney

টপ নিউজপ্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহের জবাব ইউনূস সেন্টারের

প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহের জবাব ইউনূস সেন্টারের

প্রকাশের তারিখঃ

নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউনূস সেন্টার। গত ২৫ জানুয়ারি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে যেসব মন্তব্য করেছেন, সেগুলোকে অসত্য বলে দাবি করেছে সংস্থাটি।

ইউনূস সেন্টারের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই প্রতিবাদে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগের অনেকগুলোই এর আগেও একাধিকবার করা হয়েছে। ২০১১ সাল থেকেই এ অভিযোগগুলোর অধিকাংশই বারবার তোলা হচ্ছে এবং প্রতিবারই জবাব দেওয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, ড. ইউনূস কর দেন না, কর এড়ানোর জন্য মামলা করেছেন।, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করছে ইউনূস সেন্টার। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ড. ইউনূস বরাবরই সময়মতো কর পরিশোধ করেন। এমনকি তিনি প্রতিবছরই বেশ বড় অঙ্কের টাকা কর দিয়ে থাকেন। ওই প্রতিবাদে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদের ফ্লোরে দাঁড়িয়ে জাতিকে ভুল তথ্য দিয়েছেন। প্রফেসর ইউনূস কখনোই কোনো অজুহাতে কর এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেননি। তার করসংক্রান্ত ফাইলগুলোতে ভুল খুঁজে বের করতে সেগুলো বারবার তদন্ত করা হয়েছে, কিন্তু প্রতিবারই ফাইলগুলো নিষ্কণ্টক পাওয়া গেছে। পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, তার ও তার স্ত্রীর সঙ্গে আর্থিক লেনদেন–সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জমা দিতে দেশের সব ব্যাংককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ব্যাংকগুলোর তথ্য থেকে নতুন কিছু বেরিয়ে আসেনি বলে দাবি করেছে ইউনূস সেন্টার।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মুহাম্মদ ইউনূস একজন ‘প্রতারক’। কেননা তিনি গ্রামীণফোন প্রতিষ্ঠার সময়ে তার প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গ্রামীণফোনের মুনাফার টাকা গ্রামীণ ব্যাংককে দেননি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মতে, গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণফোনের একটি যৌথ মূলধনি ব্যবসা হওয়ার কথা ছিল। ড. ইউনূস গ্রামীণফোনের শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছিলেন এবং গ্রামীণ ফোনকে তার ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করেছেন। তিনি গ্রামীণ ফোনের ৩০ শতাংশ শেয়ার নিজের কাছে রেখে অবশিষ্ট শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। জবাবে ইউনূস সেন্টার বলেছে, সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও এজেন্সিকে রক্ষিত এ সংক্রান্ত সব দলিল পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিটি বক্তব্যই ভুল। গ্রামীণফোনের জন্ম হয়েছিল একটি দীর্ঘ আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। কোনো দলিলই প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে সমর্থন করবে না বলেও দাবি তাদের।

এছাড়া ড. ইউনূস বেআইনিভাবে ৭০-৭১ বছর বয়স পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি ছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রী যে অভিযোগ করেছেন তার প্রতিবাদে ইউনূস সেন্টার বলেছে, গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয় এর পরিচালনা পরিষদ কর্তৃক নির্ধারিত শর্তে একটি চুক্তির অধীনে। এই নিয়োগের জন্য কোনো বয়সসীমা আইনে বা পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তে উল্লেখ ছিলো না।

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেছেন, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক যাতে (পদ্মা সেতুর) টাকাটা বন্ধ করে, তার জন্য বারবার ইমেইল পাঠানো, হিলারির সঙ্গে দেখা করা, এর ফাঁকে দিয়ে ইমেইল পাঠানো এবং তার সাথে আমাদের একজন সম্পাদকও খুব ভালোভাবে জড়িত ছিল। এমন অভিযোগের জবাবে ইউনূস সেন্টার বলছে, আন্তর্জাতিক সিদ্ধান্ত-গ্রহণের কঠিন জগৎ দুই বন্ধুর খেয়াল-খুশী বা একজন পত্রিকা সম্পাদকের সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার ওপর নির্ভর করে না। প্রফেসর ইউনূস যত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিই হোন না কেন, তার যত প্রভাবশালী বন্ধুই থাকুক না কেন, একটি ৩০০ কোটি ডলারের প্রকল্প শুধু তার চাওয়ার কারণেই বন্ধ হয়ে যেতে পারে না। অভিযোগের জবাবে সংস্থাটি বলে, প্রফেসর ইউনূস পদ্মা সেতু বিষয়ে বিশ্বব্যাংক বা অন্য কোনো সংস্থা বা ব্যক্তির কাছে কখনও কোনো অভিযোগ বা অনুযোগ জানাননি। সুতরাং বিষয়টি নিতান্তই কল্পনাপ্রসূত।

প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ ছিল, গ্রামীণ ব্যাংকের যত টাকা, সব সে (ড. ইউনূস) নিজে খেয়ে গেছেন। নইলে একজন ব্যাংকের এমডি এত টাকার মালিক হয় কীভাবে? দেশে-বিদেশে এত বিনিয়োগ করে কীভাবে? এর জবাবে ইউনূস সেন্টার বলেছে, প্রফেসর ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের কোনো টাকা খেয়ে ফেলেননি। গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তার কর্মকালীন সময়ে তার বেতনের বাইরে তিনি আর কোনো অর্থ ব্যাংক থেকে গ্রহণ করেননি। আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্যও কোনো সময় তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের কোনো টাকা খরচ করেননি। দেশে ও দেশের বাইরে বিনিয়োগ করতে তিনি ব্যাংকের টাকা নিয়েছেন বলে যে দাবি করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ অসত্য। এমনকি তার আয়ের উৎসও দেখিয়েছে তারা।

প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ তুলেছিলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস কোনো একটি ফাউন্ডেশনে ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ দিয়েছিলেন। তবে ইউনূস সেন্টার বলছে, তিনি কোন ফাউন্ডেশনে ৬ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেননি। এছাড়া ইউনূসের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ৬ কোটি টাকা জমা করার অভিযোগের জবাবে তারা বলে, কোনো ট্রাস্ট থেকে ৬ কোটি টাকা বা অন্য কোনো অংকের টাকা ২০২০ সালে বা অন্য কোনো সময় প্রফেসর ইউনূসের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়নি। এটা সম্পূর্ণ একটা কল্পনাপ্রসূত এবং মানহানিকর অভিযোগ।

 

সর্বশেষ

spot_img

জনপ্রিয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

ডেইলি মার্ক নিউজে জনপ্রিয়

ভারত-বাংলাদেশের যৌথ অংশগ্রহণে ব্রেমেনে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উদযাপন

মো. নাজিম উদ্দীন, ব্রেমেন প্রতিনিধি: বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিভা...

উজবেকিস্তানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনে গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারস্পরিক স্বার্থে উজবেকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ...

প্রধানমন্ত্রী আগামী সেপ্টেম্বরে ভারত সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে : মোমেন

পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী...

অস্ট্রেলিয়ায় ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির কোগরার ফ্রাই রিজার্ভ ও মিন্টুতে আজকের ঈদুল ফিতরের...

ডেইলি মার্ক নিউজে সর্বশেষ
Latest

রোহিঙ্গা বিষয়ে আসিয়ানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সিঙ্গাপুরের প্রতি ঢাকার আহ্বান

পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে টেকসই...

একনেকে ১,২২২.১৪ কোটি টাকার ৪টি প্রকল্প অনুমোদন

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) আজ মোট চারটি...

আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বিএনপি’র সমাবেশ শুরু

আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আয়োজিত...

মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য দেওয়ার আহ্বান জাতিসংঘ ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দলের

বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের আমন্ত্রণে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং...