যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস রাজ্যের মেক্সিকো সীমান্তে বদ্ধ ট্রাকের ভেতরে খুঁজে পাওয়া অভিবাসন প্রত্যাশীদের লাশের সংখ্যা বেড়ে ৫০ হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডর।
মৃতরা কোন কোনও দেশের নাগরিক তা জানিয়ে মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো ইব্রারর্ড মঙ্গলবার টুইটারে বলেছেন, ২২ জনই মেক্সিকোর, ৭ জন গুয়াতেমালার এবং ২ জন হন্ডুরাসের নাগরিক বলে শনাক্ত করা হয়েছে।
তবে বাকি ১৯ জন কোন দেশের নাগরিক সে ব্যপ্যারে কিছু জানা যায়নি, বলছেন মেক্সিকোর কর্মকর্তারা।
সোমবার রাতে সান অ্যান্টোনিও শহরের উপকণ্ঠে রেললাইনের কাছে বদ্ধ ওই ট্রাকটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় এই শহরটি মেক্সিকো সীমান্ত থেকে আড়াইশ কিলোমিটারের মধ্যে।
ওই অঞ্চলে এখন তীব্র তাপদাহ চলছে। সোমবারও সেখানে তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছিল। ট্রাকটিতে কোনও পানি ছিল না এবং তা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিতও ছিল না বলে জানিয়েছেন সান অ্যান্টোনিও শহরের দমকল প্রধান চার্লস হুড।
সেখানে ৬০ জন অগ্নিনির্বাপণ কর্মী, ২০টি ফায়ার ইঞ্জিন ও ২০টি চিকিৎসা ইউনিট নিয়ে ‘খুব সহজে দ্রুত’ কাজ করা হয় এবং জীবিত ১৬ জনের সবাইকে প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলার সময় ৪৬ লাশ পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন হুড। অসুস্থ অবস্থায় চার শিশুসহ আরও ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করান কথাও জানান তিনি।
পরে হাসপাতালে এবং ট্রাকে মৃত্যুর সংখ্যা মিলে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫০ জনে। সান অন্টারিওর ব্যাপটিস্ট মেডিকেল সেন্টার মঙ্গলবার হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনজনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে।
আইনপ্রয়োগকারী এক কর্মকর্তা এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস এন্ড বর্ডার প্রোটেকশনের (সিবিপি) এক কর্মকর্তা তদন্ত নিয়ে এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাকে প্রায় ১০০ জনকে বহন করা হচ্ছিল। তবে সঠিক সংখ্যাটি কত তা এখনও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না।
মেক্সিকোর একজন কর্মকর্তা বলেছেন, মনে হচ্ছে, ট্রাকের অভিবাসনপ্রত্যাশীরা সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত পার হয়েছিল। পরে তারা কাজের জায়গায় যাওয়ার জন্য ট্রাকে উঠেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন এন্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইইসি) মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছে এবং এ ঘটনায় মানবপাচারের চক্রান্তে জড়িত সন্দেহে জাতীয় নিরাপত্তা তদন্ত বিভাগ তিনজনকে আটক করেছে বলে জানিয়েছে।