19.5 C
Sydney

টপ নিউজযথাযোগ্য মর্যাদা ও আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মধ্যদিয়ে সারাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত

যথাযোগ্য মর্যাদা ও আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মধ্যদিয়ে সারাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত

প্রকাশের তারিখঃ

যথাযোগ্য মর্যাদা, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মধ্যদিয়ে আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে।

দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ঈদের নামাজ আদায়ের মধ্যদিয়ে পালন করছেন তাদের অন্যতম প্রধান এই ধর্মীয় উৎসব।

আল্লাহ’র সন্তুষ্টি লাভের আশায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ আজ সকালে ঈদগাহ, মসজিদ ও খোলা মাঠে সামিয়ানার নিচে আজ ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।

সকাল সাড়ে ৯ টা বঙ্গভবনের দরবার হলে ঈদুল ফিতরের নামাজে অংশ নেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। পরিবারের সদস্য ও বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে রাষ্ট্রীয় বাসভবনে ঈদের নামাজ আদায় করেন তিনি। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় মোনাজাত করা হয়। রাষ্ট্রপতি পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানান।

সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানী ঢাকায় প্রধান ঈদ জামাত হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়। মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ সর্বস্তরের লাখো মানুষ উৎসব আমেজে সেখানে নামাজ আদায় করেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সার্বিক তত্বাবধানে ঈদের প্রধান জামাতে ইমামের দায়িত্ব পালন করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন। নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এ প্রধান জামাতে মহিলা ও বিদেশী কূটনীতিকদের নামাজ আদায়ে বিশেষ ব্যবস্থা ছিল। মুসুল্লিদের জন্য ওযু, খাবার পানি ও মোবাইল টয়লেটেরও ব্যবস্থা ছিল।
জাতীয় ঈদগাহে সুষ্ঠুভাবে ঈদ জামাত অনুষ্ঠানে নেয়া হয় তিন স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঈদগাহে সকল প্রবেশ পথ এবং ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের নামাজের স্থানসহ ঈদগাহ মাঠের গোটা প্যান্ডেলে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। মুসল্লিদের ঈদগাহে প্রবেশের আগে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশীর পর আর্চওয়ে দিয়ে প্যান্ডেলে প্রবেশ করতে হয়। প্রধান এ জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাদা পোশাকে র‌্যাব এবং পুলিশ সদস্যরা ঈদগাহ ময়দানে সার্বক্ষণিক তৎপর ছিলেন।

করোনা মহামারি কাটিয়ে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এবার মসজিদের পাশাপাশি খোলা মাঠেও ঈদ জামাতের আয়োজন করে। উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৫৪টি ওয়ার্ডে ৫টি করে মোট মোট ২৭০টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

রাজধানীতে দ্বিতীয় বৃহত্তম জামাত অনুষ্ঠিত হয় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে। এখানে এবারও ৫টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৭টায়, এরপর পর্যায়ক্রমে ৮টা, ৯টা, ১০টা এবং ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয় শেষ ঈদ জামাত।

বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমানের ইমামতিতে প্রথম জামাত সকাল ৭টা অনুষ্ঠিত হয়। মুকাব্বির ছিলেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. ইসহাক।
বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মুহিবুল্লাহিল বাকী নদভী’র ইমামতিতে দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টা অনুষ্ঠিত হয়। মুকাব্বির ছিলেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সাবেক মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. আতাউর রহমান। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মাওলানা আবু সালেহ পাটোয়ারীর ইমামতিতে তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হয়। মুকাব্বির ছিলেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম হাফেয মো. নাছির উল্লাহ। বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা এহসানুল হকের ইমামতিতে চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয়। মুকাব্বির ছিলেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মোঃ শহিদ উল্লাহ।
বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মুহিউদ্দিন কাসেমের ইমামতিতে পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল পৌনে ১১টায়। মুকাব্বির ছিলেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. রুহুল আমিন।
রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা জাতীয় মসজিদে ঈদের জামাতে অংশ নিয়েছেন। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মসজিদের চারপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন দেখা গেছে। মসজিদের প্রবেশ গেটগুলোতে তল্লাশি করে মুসল্লিদের ভেতরে যেতে দেয়া হয়েছে। প্রবেশ গেট গুলোতে বসানো হয় আর্চওয়ে। দৃশ্যমান টহল ছাড়াও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এদিকে নামাজ শেষে দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৮টায় ঈদের জামাত ও খুতবা শেষে মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন সংসদ সচিবালয় মসজিদের খতিব ইমাম ক্বারী আবু রায়হান। সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, পানি সম্পদ উপ-মন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির সভাপতি ও সাবেক চিফ হুইপ আ. স. ম. ফিরোজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আ ফ ম রুহুল হক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম, জাতীয় সংসদের স্পিকারের স্বামী ফার্মাসিউটিক্যাল বিশেষজ্ঞ সৈয়দ ইশতিয়াক হোসেন, সংসদ সচিবালয়ের সচিব কে. এম. আব্দুস সালামসহ সংসদ সদস্য এবং সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ও বিভিন্ন এলাকার মুসল্লিরা জামাতে অংশ নেন।

এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ মিনার দিনাজপুর গোর-এ শহীদ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত। প্রায় ২২ একর জায়গার গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানের এ জামাতে দূর-দূরান্ত থেকে আসা প্রায় ছয় লাখ মুসল্লি অংশ নেন।
সকাল ৯টায় ঈদের জামাত মুসল্লিদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। সকাল থেকে মুসল্লিদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ বড় ময়দান। নামাজে অংশ নেন বিচারপতি এনায়েতুর রহিম, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ লাখো মুসল্লি। বৃহৎ ঈদ জামাতে নামাজ আদায় করতে পেরে আনন্দে আপ্লুত হন মুসল্লিরা।

করোনার পর দুই বছর বন্ধ থাকার পর এবার কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এবার ঈদুল ফিতরের ১৯৫তম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। সকাল ১০টায় শুরু হয় ঈদুল ফিতরের জামাত। ইমামতি করেন বড়বাজার মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা শোয়াইব বিন আব্দুর রব। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

মুসলিমদের ধর্মীয় এ উৎসব উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দও দেশবাসীকে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এ উপলক্ষে সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত তিন দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

নগরীর লাখ লাখ বাসিন্দা গ্রামের বাড়িতে আপনজন ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে ঈদের খুশি ভাগাভাগি করতে রাজধানী ছেড়ে গেছেন।
পবিত্র এ দিনটিতে উৎসবের আমেজ দিতে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহে জাতীয় ও ঈদ মোবারক খচিত পতাকা দিয়ে সুশোভিত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি সকল সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা ও ‘ঈদ মোবারক’ খচিত পতাকা উত্তোলন করা হয়। এছাড়াও নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সরকারী ভবনগুলো আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়।

এছাড়াও যথাযোগ্য মর্যাদা ও আনন্দ উৎসবের মধ্যদিয়ে ঈদ উদ্যাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ের সঙ্গে সমন্বয় রেখে স্থানীয় পর্যায়ে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলো দেশব্যাপী ঈদ উদ্যাপন করে।

বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহে সরকারি কর্মসূচির আলোকে ঈদুল ফিতর উদ্যাপনের ব্যবস্থা নেয়া হয়।

সূত্র বাসস

 

সর্বশেষ

spot_img

জনপ্রিয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

ডেইলি মার্ক নিউজে জনপ্রিয়

ভারত-বাংলাদেশের যৌথ অংশগ্রহণে ব্রেমেনে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উদযাপন

মো. নাজিম উদ্দীন, ব্রেমেন প্রতিনিধি: বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিভা...

উজবেকিস্তানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনে গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারস্পরিক স্বার্থে উজবেকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ...

প্রধানমন্ত্রী আগামী সেপ্টেম্বরে ভারত সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে : মোমেন

পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী...

অস্ট্রেলিয়ায় ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির কোগরার ফ্রাই রিজার্ভ ও মিন্টুতে আজকের ঈদুল ফিতরের...

ডেইলি মার্ক নিউজে সর্বশেষ
Latest

রোহিঙ্গা বিষয়ে আসিয়ানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সিঙ্গাপুরের প্রতি ঢাকার আহ্বান

পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে টেকসই...

একনেকে ১,২২২.১৪ কোটি টাকার ৪টি প্রকল্প অনুমোদন

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) আজ মোট চারটি...

আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বিএনপি’র সমাবেশ শুরু

আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আয়োজিত...

মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য দেওয়ার আহ্বান জাতিসংঘ ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দলের

বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের আমন্ত্রণে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং...