উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতি বর্ষণের কারণে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ১১ জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ। এছাড়া বন্যায় এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৮ জন।
আজ শনিবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব কামরুল হাসান।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত দেশের ১১টি জেলায় ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৫৪৮টি পরিবারের ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ১৫৯ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
নতুন করে আর কোনও জেলা আক্রান্ত হয়নি উল্লেখ করে সচিব জানান, ভারী বর্ষণ কমেছে। বন্যা পরিস্থিতির ক্রমেই উন্নতি হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে বলে আশা করছি।
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত বন্যায় ১৮ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে কুমিল্লায় ৪ জন, ফেনীতে একজন, চট্টগ্রামে ৫ জন, নোয়াখালীতে ৩ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন এবং কক্সবাজারে তিনজন মারা গেছেন।
বন্যাদুর্গত ১১ জেলায় মোট ৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব বলেন, এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৫২৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৮৮৮ জন আশ্রয় নিয়েছেন।
তিনি বলেন, ত্রাণের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২০ হাজার ১৫০ টন। শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৫ হাজার পিস। শিশুর খাদ্য কেনার জন্য ৩৫ লাখ এবং গো-খাদ্য কেনার জন্য ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বন্যাকবলিত মানুষকে সরেজমিন চিকিৎসা সেবাসহ অন্য সেবা তদারক করতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম এখন ফেনীতে অবস্থান করছেন বলে জানান সচিব।
ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা দিতে ৭৭০টি মেডিকেল টিম করা হয়েছে জানিয়ে কামরুল হাসান বলেন, ফেনীতে স্বাস্থ্যসেবা দিতে ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়া ফেনী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি ভিস্যাট চালু করা হয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সঙ্গে পানিবাহিত রোগবালাই বাড়ে, সে বিষয়ে প্রস্তুতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। বন্যাপরবর্তী পানিবাহিত রোগ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সে প্রস্তুতি রয়েছে।
এ সময় সচিবের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা, দুর্যোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।