মুসলিম উম্মাহর কাছে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের অমিয় বার্তা নিয়ে আবার শুভাগমন করলো পবিত্র মাহে রমজান।
আগামীকাল শুক্রবার থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হচ্ছে। আজ বাদ এশা দেশের মসজিদে মসজিদে তারাবির নামাজ শুরু হবে এবং দিবাগত ভোর রাতে সেহরি খেয়ে রোজা রাখা শুরু করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। কাল হবে প্রথম রোজা। এই হিসেবে আগামী ১৮ এপ্রিল (২৬ রমজান) মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে কদর পালিত হবে।
বুধবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।
দীর্ঘ এগার মাসের পাপ পঙ্কিল থেকে মুক্ত হওয়ার অপূর্ব সুযোগ এনে দেয় এই রমজান। পবিত্র রমজানের আগমনে মুসলিম সমাজ ও ইসলামী জীবন ধারায় এক বিরাট সাফল্যের সৃষ্টি হয়। রমজান মাস হলো ইবাদতের বসন্তকাল।
আল্লাহপাক ইবাদতপাগল বান্দাদের ক্ষমা করার জন্য সব আয়োজন করে রাখেন। এ মাসে একটি ফরজ আমলের মূল্য অন্য সময় ৭০টি ফরজ আমলের সমপরিমাণ।
পবিত্র রমজান মাসে সারা দেশের সকল মসজিদে একই পদ্ধতি অনুসরণ করে খতমে তারাবীহ্ পড়ার আহ্বান জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশের সকল মসজিদে খতমে তারাবীহ্ নামাজে প্রথম ৬ দিনে দেড় পারা করে ও পরবর্তী ২১ দিনে এক পারা করে তিলাওয়াতের মাধ্যমে পবিত্র শবে কদরে কুরআন খতমের জন্য সারা দেশের সকল মসজিদের খতিব, ইমাম, মসজিদ কমিটি, মুসল্লি এবং সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
রমজানে দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে এবং কেউ যাতে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজার অস্থিতিশীল করতে না পারে এ জন্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থা কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করবে। এ ছাড়া জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ডিসি ও ইউএনওদের সরকারের পক্ষ থেকে কঠোরভাবে বাজার মনিটরিংয়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, দেশে চালের কোন অভাব নেই। চালের কৃত্রিম সংকট তৈরী করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মঙ্গলবার খাদ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে রমজান মাসে চালের বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ বার্তা দেন।
এদিকে, পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে রাজধানীতে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস ভ্রাম্যমাণ ব্যবস্থায় বিক্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
রাজধানীর ২০টি স্থানে পহেলা রমজান থেকে ২৮ রমজান পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। এ কার্যক্রমে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৪০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৯৪০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার প্রতি কেজি ৩৪০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা এবং ডিম প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যে বিক্রয় করা হবে।
সচিবালয় সংলগ্ন আব্দুল গণি রোড, খামারবাড়ি, মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন সিটি, মিরপুর ৬০ ফুট রাস্তা, আজিমপুর মাতৃসদন, পুরান ঢাকার নয়াবাজার, আরামবাগ, নতুন বাজার, মিরপুরের কালশী, খিলগাঁও রেলগেট, নাখালপাড়ার লুকাস মোড়, সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার, মোহাম্মদপুরের বসিলা, উত্তরার দিয়াবাড়ি, যাত্রাবাড়ি, গাবতলী, হাজারীবাগ, বনানীর কড়াইল বস্তি, কামরাঙ্গীরচর এবং রামপুরায় এ বিক্রয় কার্যক্রম চালু থাকবে।